কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ছয় বছর পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে মাহমুদুর রহমান উপস্থিত থেকে বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, মডেল থানার ওসি নাসিরসহ এজাহারনামীয় ৪৭ এবং অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়। এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই আমার ওপর যে হামলা হয়েছিল, ওই ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি। আশা করব ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনবে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ফ্যাসিবাদী আচরণ করবেন না।
ফ্যাসিবাদী আচরণ করে কেউ রক্ষা পায় না। সেটা শেখ হাসিনার পলায়ন ও পতনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। অগণিত শহীদের রক্তের মাধ্যমে আজ বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরে এসেছে। এ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান দুপুরেই কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিমুল হাসান অপুসহ গণমাধ্যমকর্মী ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা থেকে যশোর বিমানবন্দর হয়ে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়া পৌঁছালে শুভেচ্ছা জানাতে শত শত মানুষ বহর নিয়ে তাঁকে অনুসরণ করেন।
২০১৮ সালের ২২ জুলাই মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া আদালতে শেখ হাসিনা ও তাঁর ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের নামে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে করা মামলায় জামিন নিতে এলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁকে রক্তাক্ত জখম করেন। গাড়ি ভাঙচুর করেন। সে সময় পুলিশ নির্বিকার ছিল। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া ত্যাগ করেন।