মাতৃশক্তির বন্দনা করে শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করলেন বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতি বছরের মতো এবারও বড় পরিসরে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকার গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে।
পঞ্জিকা মতে, মহানবমী পূজা শেষে দশমী তিথি আরম্ভ হয়ে যাওয়ায় আজই দশমী পূজা সম্পন্ন হবে। গতকাল অঞ্জলি, প্রার্থনা, বন্দনায় পালিত হয়েছে মহাঅষ্টমী ও সন্ধি পূজা। কুমারী পূজায় ঢল নেমেছিল ভক্তবৃন্দের। শাস্ত্র মতে, মানববন্দনা, নারীর সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং ঈশ্বরের আরাধনাই কুমারী পূজার শিক্ষা। সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব নিজের স্ত্রী সারদা দেবীকে মাতৃজ্ঞানে যে পূজা করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় উপমহাদেশের মিশন ও মঠগুলোতে কুমারী পূজা হয়ে আসছে। পূজার আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন লাল শাড়ি, গয়না, পায়ে আলতা, ফুলের মালা এবং অলঙ্কারে সাজানো হয় দেবীরূপে। পদ্মফুল হাতে দেবী পূজার আসনে বসার পর মন্ত্রপাঠ আর স্তুতিতে তার বন্দনা করা হয়। রামকৃষ্ণ মিশনে এবারের পূজায় কুমারী রূপে দেবীর আসনে ছিল সংহিতা ভট্টাচার্য। রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ পূর্ণাত্মানন্দ বলেন, ‘কুমারী পূজা মাতৃভাবে ঈশ্বরেরই আরাধনা। দুর্গাপূজার অষ্টমী বা নবমীতে সাধারণত ৫ থেকে ৭ বৎসরের কুমারীকে প্রতিমার পাশে বসিয়ে দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়।’
গতকাল সকাল থেকেই ভক্তরা জড়ো হতে থাকেন রামকৃষ্ণ মিশনে। সকালে নবপত্রিকাস্নানসহ পূজার অন্যান্য রীতি পালনের পর বেলা সাড়ে ১০টায় যখন কুমারী পূজা শুরু হয়, তখন মন্ডপের প্যান্ডেলে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর দেখা যায়।
ঢাকের বাদ্য, কাঁসার ঘণ্টা, শঙ্খের আওয়াজ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয় ওঠে পূজা প্রাঙ্গণ, চলে ভক্তি গীতি। এছাড়া সকাল থেকেই দেবী দুর্গার আরাধনায় মন্ডপে চলে পূজা আর চন্ডীপাঠ। রামকৃষ্ণ মিশনে বেলা সাড়ে ১০টায় শুরু হয় কুমারী পূজা, বেলা সাড়ে ১১টায় অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।