সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতনে রায়হান আহমদ নামের এক যুবককে হত্যার চার বছর পার হলেও শেষ হয়নি বিচার কাজ। নানা কৌশলে আসামিরা বিচারকাজ দীর্ঘায়িত করছে বলে অভিযোগ করেছে বাদীপক্ষ। বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন টুআইসি এসআই হাসান উদ্দীন জামিন নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। গত শুক্রবার রায়হান হত্যা মামলার চার বছর পূর্ণ হয়েছে।
সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট জুবায়ের বখত জানান, আদালত মামলার ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী ধাপে আসামি পরীক্ষা করার কথা। গত ৯ অক্টোবর ছিল আসামি যাচাইবাছাইয়ের ধার্য তারিখ। কিন্তু মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবর হোসেনের পক্ষ থেকে এক সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ২৩ অক্টোবর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। এর আগেও একইভাবে আরও সাক্ষীকে নতুন করে জেরা করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল চৌধুরী জানান, হত্যার পর থেকেই আসামিরা মামলা দুর্বল করার চেষ্টা করে আসছে। বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত করতেও তারা নানাভাবে চেষ্টা করছে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যখন আসামি পরীক্ষা হবে তখন এক সাক্ষীকে আবার জেরার আবেদন করা হয়েছে।
মামলার আসামি বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন এসআই হাসান উদ্দীন গেল চার ধার্য তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২০ সালের ১১ অক্টোবর ভোররাতে নগরীর আখালিয়ার নেহারীপাড়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ফোনে রায়হানের পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পিটিয়ে রায়হানকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দীনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।