মানবিক মানুষের অনুদানে পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালটির সভাপতির বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়। এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন হওয়ায় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’ অভিযোগের বিষয়ে জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিলে তিলে হাসপাতালটি গড়েছি। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
এদিকে ২০২৩ সালের ৩১ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপসচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি তহবিল তছরুপ, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ রয়েছে। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জন্য সরকারি অনুদান প্রদান স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে ২০১৮-২০১৯ সালের বরাদ্দ থেকে ১৭ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ১০ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা পালন করা হয়নি বলে জানা গেছে।
হাসপাতাল থেকে চাকরিচ্যুত সহকারী পরিচালক হাসিনা আকতার লিপির দাবি, গত ২১ বছর ধরে ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে লুটেপুটে খাচ্ছে জাহাঙ্গীর। হাসপাতালের অর্থ, সরকারি অনুদান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাসহ কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তিনি জানান, তার অনিময়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত চার দিন ধরে আন্দোলন করছেন হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চট্টগ্রামের গরিবের হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল রেলওয়ের জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে প্রতিদিন শত শত রোগী আসেন। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে জাহাঙ্গীর কখনো সভাপতি, কখনো সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ২০২৩ সালে এ হাসপাতালে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। উচ্চ আদালতে রিট করে আবার তিনি দায়িত্বে ফিরে আসেন।