চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নোয়াখালীর কৃতী সন্তান শহীদ মো. রায়হান। তিনি জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ওই ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মো. রায়হান। গতকাল তার পরীক্ষার ফলাফল দুনিয়ার সবাই জানলেও নিজ চোখে দেখে যেতে পারলেন না নিজের পরীক্ষার ফল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোদ্ধা রায়হান। মো. রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজি বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। তিনি রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ফল জানতে পারে তার পরিবার। ওই ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায় বিজয় মিছিলে যোগদান করলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন। রায়হানের বোন উর্মি আক্তার বলেন, আমার ভাই মেধাবী ছাত্র ছিল। তার আচার-আচরণও ভালো ছিল। তার জন্য আমার বাবা-মা সব সময় কান্না করেন। পরীক্ষার ফলাফলের খবর শুনে বাবা-মা আরও বেশি কান্না করছেন। আমার ভাই বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। রায়হানের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এ ফল দিয়ে কী হবে? সে পাস করছে তা দিয়ে এখন কী করব। তার আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা। সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা এখনো কান্না করছেন। নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি। তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করাইসি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।