ফরিদপুর সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদরাসা শিক্ষার্থী ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য।
ফরিদপুর : সদর উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মল্লিকপুর এলাকায় যাত্রীবাহী দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত ও কমপক্ষে ২৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল ভোর ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হাইওয়ে পুলিশ ও বাসযাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী গ্রিন এক্সপ্রেসের বাসটি সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়ি পরিবহনকে সাজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই খাগড়াছড়ি বাসের চারজন এবং গ্রিন এক্সপ্রেসের এক যাত্রী নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ২৭ জন। নিহতরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চি পুর গ্রামের আনসার ইসলামের ছেলে মহসিন ইসলাম (২৬), একই উপজেলার ছড়া গ্রামের সাখাওয়াত গাজীর ছেলে আবু বক্কার (৫৫), একই উপজেলার ইছামোড়ল গ্রামের সিরাজ মোল্লার ছেলে বাবু মোল্লা (৪০), খাগড়াছড়ি পরিবহনের সুপারভাইজার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বাজরা গ্রামের মনিরুল কারিগরের ছেলে নাহিদ কারিগর (১৯) ও গ্রিন এক্সপ্রেসের হেলপার মাগুরার বাগিয়া গ্রামের সিরাজ শেখের ছেলে পিকুল শেখ (৪২)।
খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী নুর আলম গাজী জানান, পূজার ছুটি শেষে বাসটি রিজার্ভ করে তারা সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার সাভারের আমতলী এলাকায় একটি ইটভাটার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। বাসের সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ হলে তারা জেগে দেখেন একটি বাস তাদের বাসের মধ্যে কিছুটা অংশ ঢুকে গেছে। বাসের সবাই কম-বেশী আহত হয়েছেন। এদিকে, জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, একটি বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই দুর্ঘটনাটি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া এলাকার মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- নূরজাহান বেগম (৫০), তার মেয়ে রেখা আক্তার (২৭) শিরিনা আক্তার (২৫) ও রেখার সাত মাস বয়সী ছেলে নিহাত। এই দুর্ঘটনায় রেখার স্বামী মোহাম্মদ সায়েম (৩৫) ও অটোচালক নিজাম উদ্দিন (৩০) আহত হয়েছেন। জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি সোহেল সরকার জানান, ভুট্টাবোঝাই একটি ট্রাক একই পরিবারের চারজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী-নাজিরহাট মহাসড়কের মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া মাদরাসার সামনে মোহাম্মদ আজওয়াদ (১৩) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আজওয়াব হাটহাজারী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধু মাহবুবের বাড়ির আলমগীরের ছেলে। তারা ওই এলাকার আবু সৈয়দ ম্যানসনে ভাড়ায় থাকে। দুর্ঘটনার পর মাদরাসা ছাত্র ও এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : কালিয়াকৈরে ছোট মেয়েকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পারাপার করে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বাবা। গতকাল সকালে ওই মহাসড়কের উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শহিদুল ইসলাম (৫৫) জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার গোপালপুর এলাকার জাফর হোসেনের ছেলে।