এক কেজি চিকন চাল উৎপাদক থেকে যখন ভোক্তার কাছে পৌঁছায় তখন এর দাম বেড়ে যায় ৪০৪ শতাংশ। এভাবে মোটা চালের দামও খুচরা পর্যায়ে বেড়ে দাঁড়ায় ২৬০ শতাংশে। উৎপাদনকারী, দুই ধাপের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার হাত ঘুরে চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে বলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
মতিঝিলে গতকাল ডিসিসিআই আয়োজিত ‘খাদ্য মূল্যস্ফীতি; নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণে গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সেমিনারে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন সংস্থার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি একেএম আসাদুজ্জামান পাটওয়ারী। এ সময় ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্রেড সাপোর্ট মেজারস উইং-এর যুগ্ম-সচিব ড. সাইফ উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের যুগ্ম প্রধান মশিউল আলম এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক (সেনসাস উইং) স্বজন হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ডিসিসিআইর গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিকেজি চিকন চাল উৎপাদনে খরচ হয় ১৩ টাকা ৮৯ পয়সা। তারা বিক্রি করেন ১৮ টাকা। হোলসেলাররা এ চাল কেনেন ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা। তারা বিক্রি করেন ৬০ টাকা। রিটেইলার বা খুচরা ব্যবসায়ীদের এ চাল কিনতে খরচ হয় ৬৪ টাকা ৩২ পয়সা। তারা বিক্রি করেন ৭০ টাকা। এভাবে চাল উৎপাদন থেকে ঢাকায় গ্রাহকের কাছে বিক্রি পর্যন্ত দাম বাড়ে ৪০৪ শতাংশ গবেষণায় বলা হয়, মোটা চাল উৎপাদনে প্রতি কেজিতে খরচ হয় ১৬ টাকা ৬৭ পয়সা। তারা বিক্রি করেন ২৩ টাকা ৭৫ পয়সা। হোলসেলাররা এ চাল কেনেন ২৬ টাকা ২৫ পয়সায়।
হোলসেলাররা বিক্রি করেন ৫০ টাকা। রিটেইলার বা খুচরা ব্যবসায়ীদের এ চাল কেনা বাবদ খরচ হয় ৫৬ টাকা। তারা বিক্রি করেন ৬০ টাকা। মোটা চাল উৎপাদন থেকে গ্রাহকের কাছে বিক্রি পর্যন্ত দাম বাড়ছে ২৬০ শতাংশ।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়লেও উৎপাদকরা ন্যায্যমূল্য পান না। কখনো কখনো দাম বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ খরচ জড়িত হয়। তিনি বলেন, স্টোরেজ, পরিবহন এবং পণ্য প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ে খরচ কমাতে পারলে দাম তুলনামূলক কমে আসবে।
ডিসিসিআই সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে গবেষণা পরিচালনা করে। যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণের মূল্যের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণের লক্ষ্যে পণ্যের সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় বাজার ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। দেশের আট বিভাগের ৪৯টি জেলায় পরিচালিত হয় এ গবেষণা। যেখানে ৬০০ জনের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এদের মধ্যে উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী রয়েছেন।