চাহিদার বিপরীতে রাজধানীর সুপার শপগুলোয় পরিবেশবান্ধব ব্যাগের (পাট ও কাপড়ের তৈরি) সংকট রয়েছে। শপগুলোয় ক্রেতা অনুপাতে সরবরাহ করা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ পর্যাপ্ত নয় বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন সুপার শপ কর্তৃপক্ষ। আবার পাটের ব্যাগগুলোর অতিরিক্ত দামের অভিযোগ আছে ক্রেতাসাধারণের। অনেকেই মাছ-মাংসের মতো পণ্য কাগজের ব্যাগে নিতে চান না। এ পরিস্থিতিতে বেশ কিছু সুপার শপ আগের টিস্যু ও প্লাস্টিকের জালের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করছে। যদিও এসব ব্যাগ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গতকাল রাজধানীর বেশ কয়েকটি সুপার শপ সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সুপার শপগুলোর কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, অনেক ক্রেতা পরিবেশবান্ধব ব্যাগে পণ্য নিতে হবে বলে বাজার করার পর তা কাউন্টারে রেখে চলে যান। দেখা গেছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে দুই থেকে তিনজন ক্রেতা দাম দিয়ে অনেকগুলো পাটের ব্যাগ কেনার প্রয়োজন থাকায় পণ্য না নিয়েই চলে যাচ্ছেন। আবার বাসা থেকে মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ ক্রেতা ব্যাগ নিয়ে আসেন। বেশির ভাগ ক্রেতা এখনো আগের টিস্যু ও জালি ব্যাগ নিতে চান। বিশেষ করে মাছ-মাংসের মতো কাঁচা পণ্যে কাগজের ব্যাগ ভিজে যাওয়ায় তাঁরা এসব ব্যাগ বহনে অনাগ্রহী। মিরপুর-১২ নম্বরের মীনাবাজার আউটলেটে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। পণ্য বহনের জন্য পাটের তৈরি ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ও কাঁচাবাজারের জন্য মোম লাগানো কাগজের ব্যাগ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কাগজের ব্যাগগুলো পণ্যের সঙ্গে বিনামূল্যে দেওয়া হলেও পাটের প্রতিটি ব্যাগ ২৫ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন বাড়ি থেকে কাপড়ের থলে বা বস্তাজাতীয় ব্যাগ আনলেও অধিকাংশই পণ্য কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে পাটের তৈরি ব্যাগ নেওয়ার সময় দাম বেশি বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন। মো. ইকবাল নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘পাশের এক সুপার শপ থেকে আমাকে বলা হয় পাটের ব্যাগে পণ্য বহন করতে হবে এবং এজন্য বাড়তি টাকাও গুনতে হবে। তখন সেখানে পণ্য না কিনে মীনাবাজার চলে আসি। কিন্তু এখানে এসেও দেখি একই অবস্থা। একটি ব্যাগের জন্য আমাকে ২৫ টাকা গুনতে হচ্ছে, যা অনেক বেশি মনে হচ্ছে।’ মীনাবাজারের এ আউটলেটের ইনচার্জ মো. কামরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ক্রেতারা পরিবেশবান্ধব এ ব্যাগ ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের এ ব্যাপারে আমরা সচেতন করছি। যখন কোনো ক্রেতা পাট বা কাগজের ব্যাগে পণ্য নিতে চান না তখন আমরা কাগজের কার্টনে পণ্য দিচ্ছি। তবে এ কার্টন পর্যাপ্ত নেই।’ মিরপুর প্রিন্স বাজার ১২ নম্বর আউটলেটে গিয়ে দেখা যায়, পাটের ও কাগজের তৈরি ব্যাগ রাখার পরও অধিকাংশ ক্রেতা আগের টিস্যু ব্যাগে (যা এখন নিষিদ্ধ) পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন। এ সুপার শপে দুটি সাইজের পাটের ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে। এর বড়টির দাম ৩২ আর ছোটটির দাম ২৯ টাকা। প্রিন্স বাজারের এ আউটলেটের ফ্লোর ম্যানেজার মো. এমরান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পাটের ব্যাগ পাচ্ছি না। প্রতিদিন আমাদের ৮০০-এর মতো পাটের ব্যাগের চাহিদা থাকলেও পাচ্ছি ২০০ থেকে ৩০০। বেশির ভাগ সময় পণ্য কেনার পর যখন ক্রেতাদের এ ব্যাগের জন্য বাড়তি টাকা গুনতে হয় তখন তারা নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। এ ক্ষেত্রে যে ক্রেতা পাটের ব্যাগে পণ্য নিতে চান না, তাঁদের জন্য আমরা কার্টনের ব্যবস্থা করছি। কিন্তু এ কার্টন আমাদের কাছে পর্যাপ্ত নেই। তবে বাসা থেকে খুব কম ক্রেতাই ব্যাগ নিয়ে আসছেন। এখনো ক্রেতারা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারে সচেতন নন।’ তিনি আরও জানান, পর্যাপ্ত পাটের ব্যাগ না পাওয়ায় নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা এখনো আগের টিস্যু ব্যাগ ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে দিচ্ছেন। মিরপুর-১২ নম্বরের স্বপ্ন সুপার শপ আউটলেটে প্রবেশমুখেই পরিবেশবান্ধব পাট ও কাপড়ের তৈরি ব্যাগ প্রদর্শন করা হচ্ছে। তবে এখানেও ক্রেতাদের প্রিন্স বাজারের মতো টিস্যু ও জালি ব্যাগে করে পণ্য নিতে দেখা গেছে। এখানে বেশ কয়েকটি সাইজে এসব ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে এর দাম ৬, ৮, ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১৬ টাকা। এ আউটলেটের ফ্লোর ইনচার্জ হাসি আক্তার নিসা বলেন, ‘আমরা এখনো চাহিদা অনুযায়ী পাটের ব্যাগের সরবরাহ পাচ্ছি না। সপ্তাহে তিন দিন একটি লটে করে এসব ব্যাগ আসছে এখন, যা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের কোম্পানি থেকে আপাতত ১০ দিন টিস্যু ও জালি ব্যাগ ব্যবহার করার অনুমতি নিয়েছি। এরই মধ্যে আমাদের ১২ লাখ পিস পাটের ব্যাগের অর্ডার দেওয়া আছে।’ অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জ্বালানি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশে গত ১ অক্টোবর থেকে দেশের সব সুপার স্টোরে পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন জাতীয় শপিং ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে সুপার শপগুলোয় বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
শিরোনাম
- বিডিইউতে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- ‘ভারত সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে হবে’
- আদানির সাথে চুক্তিটি সঠিক হয়নি : জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. তামিম
- বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর ক্ষোভ
- চার দিনের সফরে রাতে ঢাকায় আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট
- পুলিশের কাছ থেকে হাতকড়া পরা আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনতাই
- বিশ্বনাথে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- ‘আওয়ামী লীগই সংখ্যালঘুদের ওপর সবচেয়ে বেশি অত্যাচার চালিয়েছে’
- রামুতে বন্য হাতির আক্রমণে নিহত ১
- বগুড়ায় প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানায় আগুন
- ‘আওয়ামী লীগ এখনো সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে’
- সৌদি আরবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামতে পারে মাইনাস ৩ ডিগ্রিতে, সতর্কবার্তা
- রাঙামাটিতে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- মাগুরায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- যুক্তরাষ্ট্রে ওপেন এআইয়ের তথ্য ফাঁসকারী ভারতীয় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু
- ‘ইনসাফ ভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে জামায়াত’
- ছাত্র-জনতার শক্তির সাথে জোট করতে চায় এবি পার্টি
- সোনারগাঁয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আলোচনা সভা
- নাটোরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
- বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে কবি হেলাল হাফিজের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন