শিরোনাম
২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০৪:১৪

উচ্চ রক্তচাপে সুস্থ থাকার উপায়

অনলাইন ডেস্ক

উচ্চ রক্তচাপে সুস্থ থাকার উপায়

আজকাল প্রায় প্রতি পরিবারেই কেউ না কেউ ভোগেন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা যে শুধু বয়স্ক মানুষেরই হয়, তা কিন্তু নয়। অপেক্ষাকৃত কমবয়সীরাও ভুগতে পারেন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়। এ সমস্যার প্রতিকারের উপায়সহ নিচে কিছু তথ্য দেওয়া হল-

কখন ঝুঁকি:
কম বয়সীদের রক্তচাপ ১২০/৮০ হলে ঝুঁকি বেশি। এতে ভবিষ্যতে রক্তচাপ বাড়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তবে ৬০-এর কম বছর বয়সীদের রক্তচাপ ১৪০/৯০-এর নিচে রাখতে হবে। ১৪০/৯০-এর বেশি হয়ে গেলেই ওষুধ খেতে হয়। ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের প্রেশার ১৫০/৯০-এর নিচে রাখতে হবে। এর বেশি হলে ওষুধ খেতে হবে। রক্তচাপ খুব বেড়ে গেলে ডাক্তার দেখান। প্রয়োজনে ইসিজি করান।

বয়স ৪০ হলেই ছ’মাস বা এক বছর অন্তর ব্লাড প্রেশার চেক করা অত্যন্ত জরুরি। মাথা ধরা, মাথা যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা ব্লাড প্রেসার বাড়ার লক্ষণ। রক্তচাপ দু’ভাবে রেকর্ড করা হয়। সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক। হার্ট যখন পাম্প করে তখন সেটা সিস্টোল, যখন পাম্প ছাড়ে তখন তাকে বলে ডায়াস্টোল।

লবন থেকে দূরে:
হাই প্রেশারের রোগীর সারা দিনে মাত্র ২ গ্রাম লবন খাওয়া উচিত। সর্বোচ্চ ৫ গ্রাম পর্যন্ত খেতে পারেন। ধমনীর ভিতরে লবন জমে ধমনী মোটা হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। এই কারণেই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের লবন খাওয়ার উপরে নজর রাখতে বলা হয়। তবে সবসময় তো এতটা কঠোরভাবে লবনের পরিমাণ মেপে রান্না করা যায় না। তাই রোগীর রান্নায় স্বাভাবিক মাত্রায় লবন ব্যবহার করা যেতেই পারে। কিন্তু পরে খাবারে আলাদা করে লবন দেওয়া যাবে না। খাবারে লবন কম লাগলেও কাঁচা লবন ব্যবহার করা যাবে না। কাঁচা লবন খাওয়া এড়াতে ডাইনিং টেবিল বা খাবার জায়গা থেকে লবনের কৌটা দূরে রাখুন।

প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে:
১) লবন কম খান। কাঁচা লবন খাবেন না।

২) প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন সকালে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন অথবা প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটুন। বডি মাস ইনডেক্স ২৫-এর কম রাখতে হবে। 

৩) মানসিক চাপ এড়াতে মন ভাল থাকে এমন কাজ করুন। ব্যস্ত শিডিউল থেকে সময় বের করে অন্তত ১৫ মিনিট ধ্যান করুন।

৪) ডায়েটে রাখুন উদ্ভিজ্জ ফ্যাট, অলিভ অয়েল, ওমেগা অয়েল (ফিশ অয়েল), ভেজিটেবল অয়েল। হাই ফ্যাট ডায়েট, প্রাণীজ ফ্যাট, তেলজাতীয় খাবার ও কার্বোহাইড্রেট বাদ দিন। কিডনির সমস্যা না থাকলে পটাশিয়ামযুক্ত ফল ও খাবার খান। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও জাঙ্ক ফুড খাবেন না।

৫) মদ-পান, ধূমপান এড়িয়ে চলুন।

৬) বাবা-মায়ের হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে ৩০ বছরের পর থেকেই বছরে একবার ব্লাড টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত। 

৭) কিডনি, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সমস্যা থাকলে নিয়মিত হেল্থ চেকআপ জরুরি। প্রেশার হঠাৎ হাই হয়ে গেলে ক্ষতি মারাত্মক।

৮) অতিরিক্ত লো প্রেশারের রোগী হলে বেশি করে পানি খান।

হার্ট অ্যাটাক থেকে সাবধান:
উপরের রক্তচাপ ২০০-এর বেশি ও নিচের রক্তচাপ ১৩০-১৪০ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বুকে চাপ, অতিরিক্ত ঘাম, বুকের মাঝে ব্যথা, অস্বস্তি, বুকে পাথর চাপার মতো অবস্থা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। রোগী যত বেশি দিন ধরে হাই প্রেশারের সমস্যায় ভুগবেন, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হয়।

প্রেশারে ওষুধ:
রক্তচাপ বাড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করার প্রথম উপায় জীবনযাপন ঠিক করা। খাওয়াদাওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ, মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে ডাক্তার যদি ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন, তাহলে তা খেয়ে যেতে হবে। হঠাৎ ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে আবার কিছুদিন পরে খেতে শুরু করার অভ্যাস খুব খারাপ। লাইফস্টাইল ঠিক করে যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে তার চেয়ে ভাল আর কিছু হয় না। ডাক্তারের পরামর্শমতো হাই প্রেশারের ওষুধ খেতে হলে দেখে নেবেন ওষুধে যেন ডাইইউরেটিক উপাদান না থাকে। এটি শরীর থেকে পানি বেশি করে বের করে দেওয়ায় সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যায়।


বিডি প্রতিদিন/২৫ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল

সর্বশেষ খবর