২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০৯:০৪

চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছেও সারতে পারে স্তন ক্যানসার

অনলাইন ডেস্ক

চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছেও সারতে পারে স্তন ক্যানসার

প্রতীকী ছবি

তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে (আলটিমেট স্টেজেস) পৌঁছে যাওয়া স্তন ক্যানসারও সারিয়ে ফেলা সম্ভব। নজরকাড়া এই আবিষ্কারটি করেছেন আমস্টারডামের ‘নেদারল্যান্ডস ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট কেলি কার্স্টেন। তার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায়।

সাধারণত যে ৯ ধরনের ক্যানসারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়, তার মধ্যে একেবারে শীর্ষে রয়েছে স্তন ক্যানসার। বিশ্বে অন্যান্য ক্যানসারে নারীদের আক্রান্ত হওয়ার হার যেখানে ১.৫ শতাংশ থেকে ৬.১ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, সেখানে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার গড়ে ৩০.৮ শতাংশ। মানে, ৫ গুণেরও বেশি!

আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (‘হু’) পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সবক’টি মহাদেশে নারীদের মৃত্যুর কারণ হয় যে সব রোগ, তার তালিকায় প্রথম তিনটি প্রাণঘাতী অসুখের একটি- স্তন ক্যানসার! হ্যাঁ, ক্যানসারের টার্গেটেড থেরাপি (ওষুধ) ও কেমোথেরাপির যথেষ্ট উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও।

‘নেদারল্যান্ডস ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট কেলি কার্স্টেন ই-মেলে লিখেছেন, এটা আমাদের আগেই জানা ছিল, দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থার মধ্যে যে টি-সেলগুলি থাকে, সেগুলি ক্যানসার প্রতিরোধে (এমনকী, স্তন ক্যানসারও) বড় ভূমিকা নেয়। তারাই টিউমারের বাড়-বৃদ্ধি প্রতিরোধে কাজ করে! আমরা দেখেছি, নিউট্রোফিল সেটা জানে। আর জানে বলেই নিউট্রোফিলের মূল টার্গেট হয়ে ওঠে টি-সেলগুলি। টি-সেলগুলিকে অকেজো, ‘নিষ্কর্মার ঢেঁকি’ বানিয়ে দেয় নিউট্রোফিলগুলি।

ফলে, টিউমারগুলি গায়ে-গতরে আর সংখ্যায় বাড়তে পারে খুব তাড়াতাড়ি। নিউট্রোফিলগুলিকে দিয়ে এই কাজটি করিয়ে নেয় দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থার ‘ডোমিনো এফেক্ট’। সেই ‘ডোমিনো এফেক্টে’র যাবতীয় ধাপগুলি আমরা খুঁজে বের করতে পেরেছি। আর তার মাধ্যমে টিউমার নিকেশ করার কাজকর্মও শুরু হয়ে গেছে। ফুসফুস ও চামড়ার ক্যানসারের ক্ষেত্রে। তবে স্তন  ক্যানসারের ক্ষেত্রে তা এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। আমরা ইঁদুরের ওপর ওই ইমিউনোথেরাপির সঙ্গে কেমোথেরাপিকে মিলিয়ে-মিশিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছি, তা স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারছে।

আমরা এটাকে বলছি, কেমো-ইমিউনোথেরাপি। এখনও হিউম্যান ট্রায়াল বা মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর কাজটা শেষ হয়নি। তবে গবেষণায় আমি যে ইঙ্গিত পেয়েছি, তাতে বলতে পারি, এটা মানুষের ওপরেও সফল হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। ক্লিনিক্যাল টেস্ট বা মানুষের ওপর পরীক্ষার কাজটা শুরু হয়েছে নেদারল্যান্ডস ক্যানসার ইনস্টিটিউটে। স্তন ক্যানসারের যে রোগীদের কেমোথেরাপি করানো হচ্ছে, তাদের ওপরেই পরীক্ষাটা চালানো হচ্ছে।’

সাম্প্রতিক গবেষণা যদি মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে পুরোপুরি সফল হয়, তা হলে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে তা একটি মাইলস্টোন হয়ে দাঁড়াবে।’

সূত্র :আনন্দবাজার

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর