১৯ জুন, ২০১৮ ২২:৩২

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় জনপ্রিয় হচ্ছে প্লগিং

অনলাইন ডেস্ক

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় জনপ্রিয় হচ্ছে প্লগিং

সংগৃহীত ছবি

শরীরচর্চার উদ্দেশ্যে দৌড়ানোর সময় রাস্তাঘাট থেকে ময়লা আবর্জনা জড়ো করছে মানুষ, এই বিষয়টি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রতি দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দৌড়ানো বা জগিং করার সময় স্বেচ্ছায় পরিবেশের আবর্জনা জড়ো করার এই ধারণাকেই বলা হচ্ছে প্লগিং।

স্টকহোমের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫ জন কর্মকর্তা শহরের পথেঘাটে জগিং করার জন্য তৈরী হচ্ছিলেন। শুধু জগিং নয়, তারা একসাথে প্লগিং করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দলবেঁধে প্লগিং করার এই চলটা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে সম্প্রতি।

জগিংয়ের পোশাকের সাথে একটি ব্যাগও বহন করবেন তারা যেন দৌড়ানোর সময় রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা তুলে ব্যগে নিতে পারেন। প্লগিংয়ের উদ্ভাবন সুইডেনে হলেও এটি বর্তমানে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ধারণাটির উদ্ভাবক আলেক্সান্ডার আলস্ট্রং বলেন কীভাবে তিনি প্লগিং শুরু করেন। "ফিনল্যান্ডের একটি স্কি রিসোর্টে থাকার সময় আমি প্রথম সেখানকার রাস্তাঘাটের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা শুরু করি। তখন হেঁটে হেঁটেই ময়লা কুড়াতাম।"

এর কিছুদিন পর স্টকহোম এসে তিনি দেখেন যে সেখানেও রাস্তাঘাটে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে যা কেউ পরিষ্কার করে না। তখন নিজের শহর পরিষ্কার করার লক্ষ্যে একদিন নিজেই রাস্তা থেকে আবর্জনা তুলতে শুরু করেন তিনি। আলস্ট্রঙ বলেন, "একদিন জগিংয়ের সময় আমি একাই রাস্তায় ময়লা কুড়ানো শুরু করি। কয়েকদিনের মধ্যেই মানুষজন বিষয়টি লক্ষ্য করে ও উৎসাহী হয়ে ওঠে।"

প্লগিংয়ের ধারণাটি জনপ্রিয়তা পায় খুবই দ্রুত। বর্তমানে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে প্লগিং গ্রুপ রয়েছে যারা জগিংয়ের সময় পথঘাটের আবর্জনা পরিষ্কার করেন। স্বাস্থ্যসচেতনদের মতে, এটি ব্যায়াম হিসেবেও ভাল কারণ এখানে একঘেয়েমির সুযোগ নেই।

সুইডেনের একজন পরিবেশবিদ এরিক হুস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো পরিবেশবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর তিনি যেখানেই যান, সেখানকার চারপাশ থেকে আবর্জনা তুলে পরিষ্কার করা শুরু করে দেন।তিনি যেখানে যান সেখানেই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা শুরু করেন। মানুষজন যদিও তার দিকে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে তবে তিনি সেগুলো পাত্তা দেন না।

হুস বলেন, পথেঘাটে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকার সমস্যাটা যতটা ছোট মনে হয় আসলে বিষয়টি ততটা ছোট নয়। গবেষণা অনুযায়ী সমুদ্রের তলদেশের ৮৫ ভাগ আবর্জনাই ভূপৃষ্ঠ থেকে তৈরি হয় আর এই আবর্জনার সিংহভাগই প্লাস্টিক। এর মধ্যে অতি ক্ষুদ্র আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীদের মাধ্যমে অনেক সময় আমাদের দেহে ফেরত আসে এবং বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। তাই হুসের মতে এই আবর্জনা সমুদ্রে পৌঁছোতে দেয়ার আগেই পরিষ্কার করলে তা বেশি কার্যকর হবে।

প্লগিংয়ের আবিষ্কারক আলস্ট্রংয়ের মতে, "সভ্য সমাজে আবর্জনার কোনো জায়গা নেই। আর সভ্য সমাজের সদস্য হিসেবে, আমাদের তৈরি করা জঞ্জাল পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমাদেরই।"

সূত্র: বিবিসি বাংলা

বিডি প্রতিদিন/১৯ জুন ২০১৮/হিমেল

সর্বশেষ খবর