৯ নভেম্বর, ২০১৮ ১১:৫৮

মশা দিয়েই মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তির কৌশল

অনলাইন ডেস্ক

মশা দিয়েই মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তির কৌশল

এক যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গের নাম মশা। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। এই মশা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। স্প্রে, কয়েল, অ্যারোসল কোনো কিছুতেই মশা তাড়ানো সহজ নয়। আবার এসব দিয়ে মশা তাড়ালেও আমাদের স্বাস্থ্য এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 

তাই এবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানিয়েছেন, তারা মশা না মেরে মশাবাহিত রোগ থেকে মানুষজাতিকে রক্ষার এক অভিনব কৌশল আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে। রোগবাহী মশা যাতে নতুন করে প্রজনন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে নতুন বংশধর জন্ম দিতে না পারে সেজন্য প্রজনন নিষ্ক্রিয় পুরুষ মশাকে কাজে লাগাতে চান।
 
এই প্রক্রিয়ায় যদি সত্যি সত্যি পর্যাপ্ত সংখ্যক নিষ্ক্রিয় পুরুষ মশাকে মশার প্রজনন ক্ষেত্রে প্রবেশ করিয়ে দেয়া যায় তাহলে মশার স্বাভাবিক প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। মশার প্রজনন ক্ষেত্রে থাকা প্রজননক্ষম পুরুষ মশারাও তখন খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারে না। নিউ মেক্সিকো স্টেট ইউনিভার্সিটির ওই বিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করলেও অনেকেই এর বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

কারণ এই প্রক্রিয়ায় ল্যাবে কি পরিমাণ নিষ্ক্রিয় মশা তৈরি করা যাবে এবং এই মশাদের প্রজনন ক্ষেত্রে পাঠানোর প্রক্রিয়া কতটা বাস্তবায়নযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। কারণ এক একটি মশার প্রজনন ক্ষেত্রে কোটি কোটি মশার বাস। সুতরাং সেখানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মশা পাঠিয়ে পুরো প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনাটা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
 
তবে এই গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, নিষ্ক্রিয় মশা উৎপাদন করাটা কোনো কষ্টসাধ্য বিষয় নয়। ইচ্ছামতো যত খুশি তত মশা তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে ল্যাবে। আর বিপুল পরিমাণ মশা প্রজনন ক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া নিয়ে যে সমস্যার কথা ভাবা হচ্ছে তারও সমাধান করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। এক সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক মশা বহনের জন্য তারা বিশেষ এক সিরিঞ্জ পদ্ধতি কাজে লাগাতে চান। তারা এই মশাগুলোকে একটি সিরিঞ্জের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বিশেষভাবে চাপ দিয়ে খুবই কম জায়গার মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন।
 
বুধবার জার্নাল অব ইনসেক্ট সাইন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুবই কম জায়গার মধ্যে অনেক সংখ্যক মশা বহন করা সম্ভব। 
 
এই সিরিঞ্জের মধ্যে মশাদের দূরের গন্তব্যে নিয়ে যেতে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা নিয়েও ভাবতে হয়েছে গবেষক দলটিকে। নিষ্ক্রিয় মশা দিয়ে রোগবাহী মশা দমনের জন্য আগামী বছরের মধ্যে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রত্যাশা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল বলে এর সমালোচনাও কম হচ্ছে না।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

সর্বশেষ খবর