২৬ জুলাই, ২০১৬ ১৫:৫৫

গাব্বার পাঁঠার আতঙ্কে কাঁপছে গোটা গ্রাম!

অনলাইন ডেস্ক

গাব্বার পাঁঠার আতঙ্কে কাঁপছে গোটা গ্রাম!

‘শোলে’র এই গাব্বারের ভয়ে ভারতের সেই রামগড়ে বাঘে-মহিশে এক ঘাটে পানি খেত। বাড়ির বেয়াড়া বাচ্চাকে শান্ত করতে ওই একটা নামই যথেষ্ট ছিল। একই চিত্র নলহাটির ভদ্রপুরেও। গাব্বারের নামে কাঁপছে গোটা এলাকা। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে ঘরবন্দি বাড়ির শিশুরা। কোনভাবেই তাকে বশে আনতে না পেরে শেষমেশ বিচারসভা ডেকেছে স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত। আগামী ২৮ জুলাই ঠিক হবে গাব্বারের ভবিষ্যৎ।

তবে এ গাব্বার কোন ডাকু সর্দার নয়। এ হল একটি পাঁঠা! এই পাঁঠার ডাকুগিরিতেই অতিষ্ঠ নলহাটি দুই ব্লকের ভদ্রপুর। যাকে পাচ্ছে, শিং দিয়ে গুঁতিয়ে দিচ্ছে এই পাঁঠা। আবার তাড়া করে নিয়ে ফেলছে মাঝ পুকুরে। ইতিমধ্যেই সে গুঁতিয়ে জখম করেছে শতাধিক মানুষকে। কয়েকজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

যেখান থেকে এল এই গাব্বার:
স্থানীয় এক মন্দিরের পূজারি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, গাব্বার তখন অনেক ছোট। কোন এক ভক্ত তাকে রেখে গিয়েছিল এই মন্দিরে। ধীরে ধীরে বয়স বেড়েছে। বেড়েছে বেয়াড়াপনাও। এরপর এলাকার মানুষই তার নাম দেয় গাব্বার। প্রথম প্রথম বেঁধে রেখে জব্দ করা হত তাকে। কিন্তু পরে তার কাছে হার মেনেছে সকলে। বারবার দড়ি ছিঁড়ে পালায় সে। তাকে কাবু করা এক কথায় অসম্ভব হয়ে দাড়ায়। 

তামাটে সাদা গায়ের লোম গাব্বারের। কপালে সিঁদুরের তিলক। কাছে গেলেই বোঁটকা গন্ধ পাওয়া যায়। তার দাপটেই দিশেহারা ভদ্রপুরবাসী অবশেষে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন। ভদ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা রায় আগামী ২৮ জুলাই এক বৈঠক ডেকেছেন। তার আগে পর্যন্ত ভদ্রপুরের পাকুড় তলায় বাঁধা থাকবে দাপুটে এই পাঁঠাটি।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত রবিবারই ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এলাকার গোবিন্দ রায় (৫০)। ধীরে ধীরে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা। কিছু বোঝার আগেই মুখ থুবড়ে পড়লেন। কোন মতে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে নিয়ে গেল ডাক্তারের কাছে। থুতনিতে চারটা সেলাই দিতে হলো তাকে। 

অন্যদিকে ১৫ দিন ধরে ঘরের বিছানায় পড়ে রয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব মদন কুমার রায়। কাঠগড়ায় সেই গাব্বার। গ্রামের সন্ধ্যা মণ্ডল, সরস্বতী দত্তরা গাব্বারের নাম শুনলেই মেজাজ চড়াচ্ছেন সপ্তমে। 

গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান শম্পা রায় বলেন, 'এই পাঁঠাকে নিয়ে অনেক অভিযোগ। তাই ২৮ তারিখের সভায় গাব্বারের বিরু‌দ্ধে অভিযোগগুলি এজেন্ডায় রেখেছি।' বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কল্যাণ রাইয়ের কথায়, 'আমরা তো কিছু করতে পারি না। পাঁঠাতো গৃহপালিত পশু। বন্য নয়। তাই আমাদের এক্তিয়ারও নেই।' তবে নলহাটি-২ ব্লকের বিডিও ঋক সপ্তার্শ্ব বলেন, 'গাব্বারকে নিয়ে ব্লক লাইভ স্টক ডেভলপমেন্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে হবে।' অন্যদিকে প্রাণী বিকাশ দফতরের কর্মকর্তা বাসুদেব মাইতি বলেন, 'অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'  কিন্তু তত দিনে গাব্বার কোন নতুন খেলা না দেখিয়ে বসে! সেই আতঙ্কেই ভদ্রপুরবাসী!

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

 

বিডি প্রতিদিন/২৬ জুলাই ২০১৬/হিমেল-১৭

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর