বাঘের দুধের শক্তির কথা অনেকেই শুনে থাকবেন। কিন্তু ছোট্ট একটা আরশোলার দুধেরও যে এত শক্তি তা কে জানত। একটি বিশেষ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রোটিনযুক্ত যে দুধ, সেই মহিষের দুধের থেকেও তিন গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে আরশোলার দুধে!
এ ব্যাপারে গবেষণাও শুরু হয়েছে। আর সেই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন সঞ্চারী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বাঙালি গবেষক। অন্য গবেষকদের সঙ্গে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন তিনি। সেখানেই সঞ্চারী জানিয়েছেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া এক বিশেষ ধরনের প্যাসিফিক বিটল আরশোলার কথা। তিনি লিখেছেন, 'এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে–আরশোলারা কবে থেকে তাদের শরীরে দুধ তৈরি করছে। তারা তো স্তন্যপায়ী নয়। এর উত্তরটা হল, সব আরশোলা নয়। তবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া এক বিশেষ ধরনের প্যাসিফিক বিটল আরশোলা নিজেদের শরীরে দুধ তৈরি করতে পারে। যৌবন ধরে রাখার জন্য এরা স্তন্যপায়ীদের মতোই বাচ্চার জন্ম দেয়। আর তারপর বাচ্চাদের পুষ্টি দিতে তাদের শরীর থেকে বেরোতে শুরু করে এক ধরনের সাদা তরল। যা দুধের মতোই প্রোটিনে ভরপুর।'
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। তারা দেখেছেন, ওই সাদা তরল একটি সম্পূর্ণ সুষম আহার। এর মধ্যে স্ফটিকের আকারে রয়েছে অসংখ্য প্রোটিন, চিনি এমনকী স্নেহজাতীয় পদার্থও (লিপিড)। যা খেলেই মিলবে ইনস্ট্যান্ট এনার্জি। এমনকী প্রোটিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাতে সব রকমের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডও রয়েছে। এ সব জেনে শুনেই ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্যাসিফিক আরশোলাদের সাহায্যে এই প্রোটিনে ভরপুর দুধ আরও বেশি করে কীভাবে তৈরি করা যায় এখন তা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছেন গবেষকরা।
বিডি প্রতিদিন/২৭ জুলাই ২০১৬/হিমেল-২১