২৯ জুলাই, ২০১৬ ১৫:৩৮

যে শহরে স্মার্টফোনের চেয়েও সস্তা অস্ত্র!

অনলাইন ডেস্ক

যে শহরে স্মার্টফোনের চেয়েও সস্তা অস্ত্র!

সস্তায় বন্দুক, চোরাই গাড়ি, নকল ডিগ্রি, যা চাইবেন, এই বাজারে সব পাবেন। না, কোন ছবির দৃশ্য নয়, পাকিস্তানের আদিবাসী শহর দারা আদামখেলের বাজারে বেআইনি সব ধরনের জিনিস অত্যন্ত সস্তায় বিক্রি হয়। 

শহরটি সর্ববৃহৎ অস্ত্রের কালোবাজার। সেখানকার অস্ত্রের দোকানগুলোতে গেলে দেখা যাবে শত শত কালাশনিক কিংবা এমপি-৫ সাবমেশিনগান ঝুলছে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের চেয়ে স্মার্টফোনের দাম বেশি! সে দেশের এক বড় সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দারা আদামখেল শহরটি পেশোয়ার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।

বলিউডের ছবি ‘রামলীলা’য় বন্দুকের বাজারের দৃশ্য দেখানো হয়েছিল। অবাধে বিক্রি হচ্ছে ছোট বড় নানা মাপের পিস্তল। বন্দুক ঠিকঠাক চলছে কি না, আকাশে গুলি ছুড়ে পরীক্ষাও করে নেওয়া যায়। পাকিস্তানের এই শহরের চিত্রটাও সেরকমই। তবে এই বাজারটির রমরমা ব্যবসা অবশ্য এখন অতীত। 

১৯৮০’র শুরুর দিকে অবিভক্ত রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের লড়াইয়ের সময় মুজাহিদিনরা এই বাজার থেকেই হাতিয়ার কিনত। পরবর্তীকালে পাকিস্তানি তালেবানদের কাছে বন্দুকের বাজারটি এক প্রকার অস্ত্রাগারে পরিণত হয়। বর্তমানে অবশ্য বেআইনি কারবার প্রায় পুরোটাই বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বন্দুক নির্মাতা খিতাব গুল জানিয়েছেন, নজরদারির জন্য শহরের প্রতিটি কোণে চেক পয়েন্ট বসিয়ে দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ফলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

২০০৭ পর্যন্ত গোপনে বন্দুক তৈরি ও বিক্রির কাজ চলত এখানে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্দুক রপ্তানিও হত। গুল জানাচ্ছেন, গত দশ বছরে প্রায় 10 হাজার বন্দুক বিক্রি করেছেন তিনি। একটির বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠেনি। MP5, কালাশনিকভের মতো বন্দুকগুলো স্মার্টফোনের থেকেও কম দামে বিক্রি হত এখানে। এখন সবই বন্ধ। বারুদের গন্ধ নাকে এলেও বন্দুকের চাহিদার ছিটে-ফোঁটাও আর নেই এখানে। বন্দুকের দোকান পরিণত হয়েছে মুদিখানায়। কাজের অভাবে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করতেও ছাড়ছেন না তারা। স্থানীয়দের ভয়, সরকার শীঘ্রই কোন পদক্ষেপ না নিলে দারা আদামখেল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: জি নিউজ ও সংবাদ প্রতিদিন


বিডি প্রতিদিন/২৯ জুলাই ২০১৬/হিমেল-১৭

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর