১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ২২:০০

ছেলের খেলা দেখতে সাইকেলে বিশ্বঘুরে অলিম্পিক আসরে বৃদ্ধ বাবা-মা!

অনলাইন ডেস্ক

ছেলের খেলা দেখতে সাইকেলে বিশ্বঘুরে অলিম্পিক আসরে বৃদ্ধ বাবা-মা!

এবছরের শীতকালীন অলিম্পিকে ছেলে অংশ নিচ্ছেন। বাবা মা দেখতে যাবেন না তাও কি হয়? পথের দূরত্ব অনেক কিন্তু সন্তানের জন্য কোনও কষ্টই কষ্ট নয়। বরং উপস্থিত থাকতে পারাটা তার চেয়েও ঢ়ের বেশি আনন্দের। তাই কুছ পরোয়া না করে বুড়োবুড়ি সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পরলেন।

এক বছর লাগেছে পৌঁছাতে। সাইকেলে। কারণ পথটা যে কম নয়। ১৭ এর পিঠে তিনটে শূন্য। ১৭০০০ কিলোমিটার। যে সে কথা? এবছরের উইন্টার অলিম্পিকের গন্তব্য পিয়ংচ্যাঙ। এই সপ্তাহেই অলিম্পিক। ছেলে খেলবে তাতে। কতদিন লাগতে পারে সাইকেলে চড়ে সুইজারল্যান্ড থেকে কোরিয়ার পিয়ংচ্যাঙ পৌঁছতে? হিসেব করে নিয়ে এক বছর আগে বেড়িয়ে পড়েন দুই জীবনসঙ্গী। 

সুইস ফ্রি স্টাইল স্কিয়ার মিচা গাসেরের বাবা এবং সৎমা গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাদের বাড়ি ছাড়েন। বাড়ি ওল্টেনে। জুরিখ থেকে ৭০ কি.মি. পশ্চিমে। ২০টি দেশ ঘুরে তারা পিয়ংচ্যাঙ পৌঁছাছেন। 

৫৫ বছরের গুইডো হুইলার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এখানে পৌঁছে দেখলাম আমার ছেলে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এতে আমরা সত্যিই আপ্লুত। আমার কাছে তা বোঝানোর ভাষা নেই। 

মিচা গাসেরের সৎমা ৫৭ বছরের রীতা রুট্টিমান জানিয়েছেন, রোজ সাইকেল চালানো খুব কঠিন। তাদের সবচেয়ে কঠিন রাস্তা পেরোতে হয় পামির হাইওয়েতে। সেটি ছিল সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের। ৪০০০ মিটার উচ্চতায় চড়তে হয়। এই রাস্তাটিই মধ্য এশিয়ার বেশকিছু দেশকে পেরিয়ে গেছে। 

গুইডো বলেন, আমরা ভীষণ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। রাস্তা পার করতে পেরেছি। পৌঁছাতে পেরেছি গন্তব্যে।  আখন আবার সুস্থ হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে।

গুইডো জানান যখন তারা চীনের সীমানায় পৌঁছান সেখানে তাদের ভিসা নিতে অস্বীকার করা হয়। কারণ ছিল তার গাল ভর্তি দাড়ি। তিনি এই দাড়ি কেটে ফেলতে নারাজ ছিলেন।

ছেলে গাসেরের ফ্রি স্টাইল স্কিইং ইভেন্টের জন্য দক্ষিণ কোরিয়াতে এই দম্পতি ক্যাম্প করেছিলেন সাব-জিরো ডিগ্রি তাপমাত্রায় পিয়ংচ্যাঙের ফোয়েনিক্স পার্কে। 

গাসেরের বাবা জানান, তার ২৬ বছরের ছেলে সেই চার বছর বয়স থেকে অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন দেখেছে। আমার মনে হয় সে যে তার এই স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছে এটা খুবই প্রয়োজনীয়। আর আমি চেয়েছি তার এই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সময় তার পাশে থাকতে।

গাসেরকে 'চিয়ার' করে উৎসাহিত করার পর এই যুগল আবরও সাইকেলে করে দক্ষিণ কোরিয়া ঘুরে তবে বমানে করে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সেখান থেকেই তাদের সুইজারল্যান্ড ফেরার প্লান করেছেন। 

সুইজারল্যান্ড ফিরে তারা চীন রাশিয়া ও মঙ্গোলিয়ার ভিসা করাবেন। তারপর আবার পাড়ি দেবেন সেই দেশগুলির উদ্দেশ্যে। গুইডো হুইলার হাসতে হাসতে বলেন, আমরা পাগল!

বিডি প্রতিদিন/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর