১৮ আগস্ট, ২০১৮ ১৫:১২

ফারাওদের আগেও মমি প্রথা চালু ছিল মিশরে, বিস্মিত গবেষকরা!

অনলাইন ডেস্ক

ফারাওদের আগেও মমি প্রথা চালু ছিল মিশরে, বিস্মিত গবেষকরা!

সংগৃহীত ছবি

মমি। ছোট্ট একটা শব্দ। কিন্তু তারই মধ্যে রয়েছে রহস্যের হাতছানি। এই মমি ঘিরেই হাজার হাজার বছর আগের পৃথিবীর দিনকাল ভেসে ওঠে চোখের সামনে। সেই সঙ্গে অবধারিত অতিলৌকিক সব কাহিনী। 

লেখকের কল্পনা হোক বা হলিউডের রুপোলি পর্দা, মমির আবেদন সর্বজনবিদিত। তুতেনখামেনের অভিশপ্ত মমি হোক বা অন্য ফারাওদের মমি, সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি গবেষকদেরও এই সব মম ঘিরে কৌতূহলের শেষ নেই। এ নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কারও তাই হয়ে চলেছে। 

সম্প্রতি এক বহু পুরানো মমিকে ঘিরে নতুন আবিষ্কারের কথা সামনে এল। জানা গেল, ফারাওদের আগেও মমি প্রথা চালু ছিল প্রাচীন মিশরে। চাঞ্চল্যকর এই খবরে স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজিত কৌতূহলী মানুষরা। 

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘লাইভসায়েন্স.কম’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সেই মমিটি পাওয়া গিয়েছিল গত শতাব্দীর একেবারে গোড়ায়। ১৯০১ সাল থেকে ইতালির তুরিন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে মমিটি। মোটামুটি ভাবে ৩৭০০ থেকে ৩৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের সময়কালের সেই মমিটি সম্পর্কে এতদিন সকলের ধারণা ছিল, মমিটি কৃত্রিম ভাবে সংরক্ষিত হয়নি। কোনও দুর্যোগের পরে মরুভূমিতে প্রাকৃতিক ভাবেই দেহটি সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছিল। 

কিন্তু গবেষকরা এখন জানতে পেরেছেন, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী সেই যুবকের দেহটিকে কৃত্রিম ভাবেই সংরক্ষণ করা হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই এমন আবিষ্কারে মমির ইতিহাস নিয়েই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে গবেষকদের। কেননা, গবেষকদের এই দাবির অর্থ, এতদিনের জানা সময়েরও ১ হাজার বছর আগেই এই বিদ্যা আয়ত্ত করেছিল মিশরের মানুষ।

গত ১৫ আগস্টে ‘জার্নাল অফ আর্কিওলজিক্যাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। সেই গবেষক দলের অন্যতম গবেষক অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা জানা জোন্স জানিয়েছেন, মমিটির ডান কবজি, ধড় খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার পরে বোঝা গেছে সেটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষা করা হয়েছে দেহের সঙ্গে থাকা ব্যাগটিও। দেখা গেছে, জৈব তেল, প্রাণীজ চর্বি ও আরও বহু পদার্থের প্রলেপ দিয়ে কাপড়ে মোড়ানো হয়েছিল দেহটি। উদ্দেশ্য অবশ্যই সংরক্ষণ। 

সেই মমিটি এত প্রাচীন, যখন লেখার ভাষাও আবিষ্কৃত হয়নি। সম্ভবত মুখে মুখেই সেই সংরক্ষণের প্রক্রিয়া প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাহিত হয়েছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, তখনকার সময়ের মানুষের মধ্যে মরণোত্তর জীবন সম্পর্কে অটুট বিশ্বাস ছিল। তারা চাইত দেহটি সংরক্ষণ করতে। আর সংরক্ষণের পদ্ধতিও তারা আবিষ্কার করে ফেলেছিল। 

এক যুবকের শরীর এইভাবেই প্রাচীন পৃথিবীর দরজা আচমকাই যেন খুলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের সামনে। তারা বিস্মিত হয়ে লক্ষ করছেন, সেই সুদূর অতীতেও মানুষ চারপাশের প্রাকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়েই কীভাবে দেহ সংরক্ষণের আশ্চর্য পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেলেছিল। 


বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর