বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কারখানা সংস্কারে সুদহার ৭ শতাংশের বেশি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

কারখানা সংস্কারে সুদহার ৭ শতাংশের বেশি নয়

কারখানা সংস্কারে ব্যাংক ঋণের সুদ ৭ শতাংশের বেশি নেওয়া যাবে না। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নোটিস জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জাইকার দেওয়া তহবিল নিয়ে কোনো ব্যাংক গ্রাহককে ঋণ দিলে সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৬ শতাংশ। অন্যদিকে ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগী এএফডির তহবিল থেকে ঋণ দিলে সে ক্ষেত্রে গ্রাহকের পর্যায়ে সর্বোচ্চ আরোপকৃত সুদ হবে ৭ শতাংশ। গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জারি করা এ নোটিস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। নোটিস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) জহির উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পোশাক খাতের কারখানা সংস্কার ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে যে তহবিল দিয়েছিল সুদের হার বেশি হওয়ায় তার ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। এখন তা কমিয়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনায় তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা তাদের কারখানা সংস্কার ও শ্রমপরিবেশ উন্নয়নে আরও বেশি আগ্রহী হবেন। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসে দাতা সংস্থাগুলো। এ লক্ষ্যে স্বল্প সুদে কারখানা মালিকদের ঋণ সহায়তা দিতে তারা প্রায় ৫০০ কোটি টাকার তহবিল দেয়। দাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান উন্নয়ন সংস্থা জাইকা, বিশ্বব্যাংকের আইএফসি ও ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগী এএফডি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনায় এ তহবিলের বিপরীতে দাতারা ১ শতাংশের নিচে সুদ নিলেও গ্রাহক পর্যায়ে এর সুদ ধরা হচ্ছিল ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তহবিলের টাকা নিয়ে বেশি হারে সার্ভিস চার্জ আরোপ করার কারণেই এমনটি হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে গত দুই বছরে ওই তহবিলের অর্থ ব্যবহার হয়নি বললেই চলে। এ অবস্থায় কারখানা সংস্কারে ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানোর জন্য পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ’র নেতারা অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি গত জুনে পোশাক খাতের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও আইএফসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক খাতের সংস্কারের জন্য বিশেষ কোনো ঋণ সুবিধা চালু নেই। তারা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিল আমলাতান্ত্রিক ঝামেলার মুখে পড়েন। আর ঋণ পেলেও তার সুদহার হয় অনেক বেশি। ছোট কারখানার মালিকদের জন্য সুদহার ১১ থেকে ১৮ শতাংশ। আর বড় ঋণগ্রহীতার জন্য সুদহার ৯ থেকে ১৬ শতাংশ। শেষে গত মাসে দাতাদের দেওয়া ঘূর্ণায়মান তহবিল ব্যবহারে ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগের নোটিসে বলা হয়েছে, জাইকা তহবিলের বিপরীতে সুদ নেবে দশমিক ৯ শতাংশ হারে, তহবিল ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক সার্ভিস চার্জ নেবে ১ শতাংশ হারে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ওই তহবিল থেকে টাকা নিয়ে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আরোপ করতে পারবে। ফলে জাইকার দেওয়া তহবিল থেকে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। একইভাবে এএফডির তহবিল ব্যবহার করে সাড়ে ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জ ধরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ খবর