বুধবার, ৭ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুরান ঢাকার সবজি রপ্তানিতে ভাটা

মাহবুব মমতাজী

পুরান ঢাকার সবজি রপ্তানিতে ভাটা

পুরান ঢাকার সবজি বাণিজ্যে সংকট তৈরি হয়েছে। দেশের নানা জাতের সবজি সেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হলেও ইউরোপে রপ্তানি কমার পর এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের রপ্তানি ও বাণিজ্যে ভাটা অবস্থা চলছে। রপ্তানি কাজে সংশ্লিষ্ট মুজিবুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, তারা রাজধানীর কারওয়ান বাজার এবং পুরান ঢাকার শ্যামবাজার থেকে সবজি কিনে রপ্তানি করেন। বিদেশে পাঠানো সবজির চালানে একসঙ্গে ৩০০-৪০০ কার্টন থাকে। তিন থেকে পাঁচ কেজি পরিমাণ সবজি দিয়ে এসব কার্টন করা হয়। কার্টনগুলো বিমানবন্দর থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চলে যায়। সবজি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রাফি ফ্রেইড সিস্টেমের সাইফুল ইসলাম জানান, আগে যে পরিমাণ সবজি রপ্তানি হতো- তা এখন তিন ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। রপ্তানি কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো—বিমানবন্দরে ভোগান্তি। সেখানে যতগুলো সবজির কার্টন পাঠানো হয় তার অর্ধেকই ফেরত দেওয়া হয়। এসব নানা কারণে সবজি রপ্তানিতে ভাটা অবস্থা চলছে। সংকট তৈরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, এ পরিস্থিতির মধ্যেও ছোট ছোট চালানে প্রায় ২০ ধরনের সবজির কার্টন করে তারা রপ্তানি অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু এ খাতটির উন্নয়নে সরকারের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। বিশেষ করে শাক-সবজি আন্তর্জাতিক মানে রাখার জন্য যে সাপোর্ট থাকা প্রয়োজন—তা বাস্তবে নেই। অভিযোগে জানা গেছে, সরকারিভাবে শ্যামপুরে ল্যাবসহ অত্যাধুনিক প্যাকিং হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু পরিচালনার নীতিমালা তৈরি ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না হওয়ায় সেটি এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্তরা বলছেন, চার বছর আগেও রপ্তানি হওয়া সবজির ৫২ শতাংশ যেত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। তবে সালমোনেলা ভাইরাস পাওয়ার পর ২০১৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে পান আমদানি বন্ধ করে দেয়। এর মধ্য দিয়ে সবজি রপ্তানিতে প্রথম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এর কিছুদিন পর সবজির চালানে ক্ষতিকর জীবাণু ও পোকামাকড় পেয়ে আট ধরনের সবজি ও ফলমূল রপ্তানি বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয় ইউরোপের দেশগুলো। তাদের পক্ষ থেকে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আসার আগেই সেখানে সবজি রপ্তানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। প্রসঙ্গত, পুরান ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হওয়া সবজির মধ্যে আছে পটোল, করলা, পেঁপে, কচুর লতি, কাকরোল, শসা ও কপি। এসবের বেশির ভাগই যায় দুবাই ও কাতারে। কেউ কেউ সিঙ্গাপুরেও পাঠান। এ রপ্তানির সঙ্গে যারা জড়িত আছেন সংখ্যায় তারা প্রায় সাড়ে ৪শ’র মতো।

সর্বশেষ খবর