১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৯:০৭

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি দেওয়ার এখতিয়ার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি দেওয়ার এখতিয়ার নেই

শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দেশের নয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রী দেওয়ার এখতিয়ার নেই। কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তারা পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করতে পারে না। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় এটা করছে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া  অনেকে আমেরিকা থেকেও পিএচডি ডিগ্রি নিয়ে আসেন। এসবের কোন স্বীকৃতি নেই। টাকা দিয়ে আমেরিকা থেকে বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি সনদ দাখিল করে সুবিধা গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামীতে এধরনের অসৎ বাণিজ্যের সুযোগ বন্ধ হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে আজকের প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলীয় সদস্য আবদুল মতিন খসরুর সর্ম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সদস্য বেগম পিনু খানের (মহিলা আসন-২৩) প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী একবছরের মধ্যে যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য জমি ক্রয় করতে ব্যর্থ হবে, আগামী শিক্ষাবর্ষ হতে সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যে সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আগামী বছরের মধ্যে নিজস্ব ক্যাম্পাসে কার্যক্রমে শুরু করতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

বিরোধী  দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের (ঢাকা-৬) অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে প্রচলিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন  গ্রেড পদ্ধতি বাতিল করা হয়। এরফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ সংক্ষুব্ধ হন। শিক্ষকদের সংক্ষুব্ধতা নিরসনে উচ্চ পর্যায়ে একটি ক্যাবিনেট উপ-কমিটি গঠন করে, এই কমিটির নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষকদের এ দাবির বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন দিত পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। আশা করা যায় শিগগিরই এ বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বের হবে।  

সফিকুল ইসলাম শিমুল (নাটোর-২)’র প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতির ধারা বজায় রাখার জন্য ছাত্র সংসদ কার্যকর করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এক সময় ছাত্র সংসদ খুবই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু সামরিক শাসন, স্বৈরশাসন এমনকি গণতান্ত্রিক শাসন আমলেও এটা বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা একটি রোগ এখন। কেউ সাহস করে এর থেকে বেরুতে পারছেন না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছাত্র রাজনীতি গণতন্ত্র চর্চার সূতিকাগার। বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির এর গৌরবোজ্জল ভূমিকার রয়েছে। এখান থেকেই আত্মপ্রকাশ করেছেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর স্বাধীনতা অর্জন এবং পরবর্তীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় অর্জনে দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সমাজের ভূমিকা খুবই গুরুপ্তপূর্ণ।

সরকার দলীয় অপর সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের (বগুড়া-৪) প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর নামে ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ও ভর্তি ফি’সহ সকল ধরনের ফি এর হার বৃদ্ধি করার বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১৭ জানুয়ারি বর্ধিত বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সংশ্লষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও ফি হিসেবে এবং এসএসসি’র ফরম পূরণের সময় আদায়কৃত বাড়তি টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য সাতদিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে টাকা ফেরৎ না দিলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে বাড়তি অর্থ শিক্ষার্থীদের  ফেরৎ দিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডকে তা অবহিত করতেও বলা হয়েছে। 
 

বিডি-প্রতিদিন/ ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর