২৯ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:৫৫

'নিজ স্বার্থে সংবিধানের ব্যাখ্যা জাতির অপূরণীয় ক্ষতি'

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

'নিজ স্বার্থে সংবিধানের ব্যাখ্যা জাতির অপূরণীয় ক্ষতি'

দেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন সংবিধান রক্ষায় আইনজীবীদের এক সঙ্গে বসার আহবান জানিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্রের তিনটি অপরিহার্য বিভাগ- আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ। এ বিভাগ গুলো স্বাধীনভাবে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ হচ্ছে রাষ্ট্রের অভিভাবক। রাষ্ট্রের স্বার্থেই বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখতে হয়। এ স্বাধীনতার ওপর হাত দেওয়া কোনভাবেই ঠিক নয়। নিজ নিজ স্বার্থে সংবিধানের ব্যাখ্যা করা জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। এটি সংবিধানের ওপরই হস্তক্ষেপের নামান্তর। সংবিধানের ওপর হস্তক্ষেপ করে অতীতে কেউ টিকে থাকতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না।           

বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মো. কফিল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সদস্য এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ সিরাজউদ্দৌলা কুতুবী, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহাজাহান কবীর, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুজিবুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এস এম জাহেদ বীরু, অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাসেল।   

বিশিষ্ট এ সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, সবাই সব দল করতে পারেন। তবে সংবিধান, গণতন্ত্র আর মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়- এমন কাজ না করাই ভাল। এটি করে পার পাওয়া যাবে না। অতীতেও আমরা সামরিক শাসকদের প্রতিরোধ করেছি, সংবিধান রক্ষা করেছি। আপনারা যে দলেরই হোন না কেন, সংবিধান নিয়ে এত কথা কেন? সংবিধানের এত ব্যাখা কেন? আসুন এই সংবিধান রক্ষায় আইনজীবীরা এক সঙ্গে বসি। সংবিধানের মৌলিক অধিকার নিয়ে, অক্ষুণ্নতা নিয়ে, সংবিধান রচনার উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করা দরকার।

দেশের অন্যতম এ সংবিধান প্রণেতা বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সরকার সেটি কেন তাড়াহুড়ো করে মন্ত্রিসভায় পাস করে ফেলতে চায়, তার জবাব দিতে হবে। আগামী ৫ মে মামলাটির রায় প্রদান করা হবে। এই মামলায় আদালতের আমন্ত্রণে আমি লিখিত মতামত দিয়েছি। খসড়া আইনের উপর বিচারক, জজ সাহেব, বিশ্লেষক, সাবেক প্রধান বিচারপতি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিনদের মতামত নিন। মতামত না নিয়ে, আলোচনা না করে সেটি পাস করলে বিচার বিভাগের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মতে, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদকে দেয়ার বিধান কার্যকর হলে দেশের বিচার বিভাগ ও সংবিধানের অপুরণীয় ক্ষতি হবে। এক মিনিটেই কেবিনেটে আইন পাস করলে হবে না। এটি যদি জনমত উপেক্ষা করে করা হয়, তবে তার ফল ভালো হবে না।

বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ এপ্রিল ১৬/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর