২৫ জুলাই, ২০১৬ ১০:০৩

নিখোঁজ শেহজাদ ও তাওসীফ দেশেই!

অনলাইন ডেস্ক

নিখোঁজ শেহজাদ ও তাওসীফ দেশেই!

সরকার প্রকাশিত কথিত নিখোঁজ জঙ্গি শেহজাদ রউফ অর্ক ও তাওসীফ হোসেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর গত ১৭ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজদের যে দ্বিতীয় তালিকা দিয়েছিল, তাতে নাম আসে শেহজাদ ও তাওসীফের।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বলেছে, বাড়ি থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি উধাও এই দুই সন্দেহভাজন তরুণের পাসপোর্ট ধরে খোঁজ নিয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে এই দুজন দেশত্যাগ করেননি। দুই হামলার সময় নিহত নিবরাজ ও আবীরের সঙ্গে এই দুজনও ঝিনাইদহের সেই মেসে থাকতেন বলে ধারণা জঙ্গি-তদন্তে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, ওই মেসে থাকা সবাই এই দুটি হামলায় জড়িত ছিলেন এবং তারা সবাই এখনও দেশেই রয়েছেন। খবর বিডি-নিউজের।

এই বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে না চাইলেও ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া রবিবার বলেছেন, গুলশান হামলার রহস্য ‘উদঘাটিত’, জড়িতদের গ্রেফতার এখন ‘সময়ের ব্যাপার’।

গত ফেব্রুয়ারিতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র নিবরাজ ও আবীর ঝিনাইদহ শহরের যে মেসটিতে থাকতেন, সেখানে আরও ছয়জন ছিলেন। ঈদের আগে জুন মাসের শেষ দিকে ওই আটজনই মেস ছেড়েছিলেন, পরে আর ফেরেননি বলে বাড়ির মালিক জানান।

এর পরপরই ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা হয়। ২০ জনকে হত্যার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে নিবরাজকে পাওয়া যায়। তার ছয় দিন পর ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের কাছে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর গোলাগুলিতে প্রাণ হারান আবীর।

ওই হামলার কয়েকদিন আগে আবীর শোলাকিয়ার নীলগঞ্জ সড়কে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে উঠেছিলেন। ১ জুলাই আবীর চারজন থাকার কথা বলে দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন বলে বাড়ির মালিক জানান।

গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার তদন্তে র‌্যাব সম্প্রতি বগুড়ার দুর্গম চরে জঙ্গিদের আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালায়। ধারণা করা হচ্ছে, ঝিনাইদহ থেকে গিয়েই ওই চরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন জঙ্গিরা এবং পরে গুলশান ও শোলাকিয়ায় ‘অপারেশনে’ যান। বগুড়ায় যমুনার চরে ওই প্রশিক্ষণে তাওসীফ ও শেহজাদও ছিলেন বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা।

নিবরাজের সঙ্গেই মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন শেহজাদ। তার বাসা ঢাকার বারিধারায়। তার বাবার নাম তৌহিদ রউফ।

নিবরাজ ৩ ফেব্রুয়ারি ঘর ছেড়েছিলেন বলে তার বাবা গণমাধ্যমকে জানান। আবীরও বাড়ি ছেড়েছিলেন মার্চ মাসে। তাওসীফও বাড়ি ছাড়েন একই সময়ে। তাদের বাসা ঢাকার ধানমণ্ডির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বাবার নাম ডা. মো. আজমল।

গুলশানে হামলার পর এর দায়িত্ব স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের নামে বার্তা আসে ইন্টারনেটে; যদিও সরকার বলছে, বাংলাদেশে বেড়ে ওঠা এই জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।  

তাওসীফের ফুপাত ভাই আহমেদ শাম্মুর রাইয়ান একবার আইএসে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছিলেন। স্কলাসটিকার সাবেক ছাত্র শাম্মুর মালয়েশিয়ায় পড়তেন, যে দেশটিতে নিবরাজও পড়তেন।

শাম্মুর এখন জামিন নিয়ে ঢাকার বড় মগবাজারে তাদের বাসায়ই আছেন। তবে তার মা ছেলের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন।

নিখোঁজদের তালিকায় থাকা অনেকে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি বলেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিদেশে রয়েছেন বলেও তথ্য মিলছে।

বিডি-প্রতিদিন/২৫ জুলাই, ২০১৬/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর