২৭ আগস্ট, ২০১৬ ১৬:৪৭

'ক্ষতি হলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করতাম না'

অনলাইন ডেস্ক

'ক্ষতি হলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করতাম না'

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এদেশের স্বাধীনতা এনেছি, আমরা এ দেশের উন্নয়নে কাজ করছি। কাজে এতটুকু আস্থা আমার ওপর রাখা উচিৎ। কোনো ক্ষতি হলে আমি অন্তত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করতাম না।

শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‍রামপালের কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় সরকার সবদিক থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছে।বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে জার্মানির একটি ফার্মকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো আপোস করবো না।

শেখ হাসিনা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। বিভিন্ন গ্যাস-এসিড নিঃসরণে উচ্চপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতি বসানো হবে। বাতাসে ওড়া ছাই ধরে রাখার ব্যবস্থা হবে, যা সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহার হয়। গ্যাস থেকে সার উৎপাদন করা হবে।

তিনি জানান, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস নিঃসরণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) বেধে দেওয়া সীমারেখার চেয়েও অনেক কম হবে।

প্রধানমন্ত্রী দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনার তথ্য তুলে ধরে বলেন, খনি থেকে যে কয়লা উঠছে তা বড়পুকুরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রলারে করে। সেটা সাব ক্রিটিক্যাল, কোনো উন্নত প্রযুক্তি নয়। ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০০২ সালে শুরু হয়। সেটা খালেদা জিয়া বন্ধ করেননি। তখন কোনো মায়া কান্নাও ছিলো না। আপনারাও লিখতে পারেননি কোনো ক্ষতি হয়েছে। তাহলে এটি নিয়ে কেন কথা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগ সবসময় উন্নয়নের জন্য সংগ্রাম করেছে। জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা। সরকার জনগণের সেবক, এটা আওয়ামী লীগই কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দেশের উন্নয়নবিরোধী একটি মহল মানুষকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা এতোদিন খোঁজার চেষ্টা করছিলাম এর পেছনে শক্তিটা কোথায়? এতদিন পরে আমরা দেখলাম, খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে এই অপপ্রচারে সংহতি প্রকাশ করেছেন।তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর সুন্দরবন রক্ষা করা, বাঘ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করায় এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য বলে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো যে এলাকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে তা থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, পরিবহন সহজলভ্যতা ও বসত-বাড়ি স্থানান্তর প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু অনেকে অজ্ঞতাবশত সমালোচনা করছেন। যারা সমালোচনা করছেন, বিশেষ করে যখন বিএনপি নেত্রী যখন কথা বলেন, তখন আমার মনে হয় মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম।

শুরুতেই সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তারপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।

বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের নিকটবর্তী বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত হচ্ছে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’।

প্রকল্পে সহায়তা করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের এনটিপিসি লিমিটেড। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের জন্য ৪৩০ একর ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া চলছে প্রাথমিক অবকাঠামোর কাজ।

বিডি প্রতিদিন/  ২৭ আগস্ট ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর