২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ২০:৫৬

দেশের ১২ শতাংশ মানুষ আর্সেনিক ঝুঁকিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের ১২ শতাংশ মানুষ আর্সেনিক ঝুঁকিতে

ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেছেন, দেশের ২৯ শতাংশ নলকূপের পানিতে মাত্রারিক্ত (৫০ পিপিবি-এর উপরে) আর্সেনিক পাওয়া গেছে। বর্তমানে ১২ শতাংশ মানুষ আর্সেনিক দূষণজনিত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসনের লক্ষ্যে ১৮৬৫০৪.৬১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে আজ প্রশ্নোত্তর পর্বে বেগম লুৎফা তাহেরের (মহিলা আসন-৪০) লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ২০০৩ সালে সমগ্র দেশের ২৭১ টি উপজেলার ৫০ লাখ নলকূপের আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪.৫ লাখ অর্থাৎ ২৯ শতাংশ নলকূপের পানিতে মাত্রারিক্ত (৫০ পিপিবি-এর উপরে) আর্সেনিক পাওয়া গেছে। আর্সেনিক নিরসনে বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরে বর্তমানে ১২ শতাংশ মানুষ আর্সেনিক দূষণজনিত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তিনি আরো জানান, জনগণকে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২৯ জেলার ১১০ টি উপজেলার এক হাজার ১২৪ ইউনিয়নে আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি নিশ্চিত হবে। এছাড়া প্রায় সমগ্র দেশের আর্সেনিক দূষণের বর্তমান পরিস্থিতি জানা যাবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের আর্সেনিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় দেশে আঞ্চলিক পর্যায়ে ১৩ টি ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ১টিসহ মোট ১৪ টি ল্যাবরেটরিতে পানির গুণাগুণ পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আর্সেনিকের মাত্রা নিরূপণ ও ভূগর্ভস্থ পানির স্থিতি তলের তারতম্য মনিটরিং সুবিধার্থে ৭৯১ টি অবজারভেশন ওয়েল স্থাপন করা হয়েছে।

গোলাম দস্তগীর গাজীর (নারায়ণগঞ্জ-১) লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন সংসদকে জানান, রাজধানীতে দৈনিক ২৩০-২৩৫ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানির চাহিদার রয়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, ঢাকা ওয়াসা চাহিদা অনুযায়ী বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে।

এমএ মালেকের (ঢাকা-২০) অপর লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ঢাকা শহরের পানি সরবরাহে নিয়োজিত ঢাকা ওয়াসা চাহিদার শতভাগ পানি সরবরাহ করছে। বর্তমান সরকারের সময়ে প্রথমবারের মত ঢাকা ওয়াসা চাহিদার বিপরীতে ২৪৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। এর বাইরেও টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর সুফল রাজধানীবাসী ২০২১ সাল নাগাদ পাবেন।

রাজধানীর মশা নিধনে বরাদ্ধ পৌনে ৩৮ কোটি টাকা:
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের (ভোলা-৩) প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মশা নিধনে চলতি অর্থবছরে ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মশক নিধনে ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের জন্য ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্ধ প্রদান করা হয়েছে। 

ভালো উকিল ধরার পরামর্শ সমবায় মন্ত্রীর:
যেসব জায়গায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় রয়েছেন তাদের ক্ষমতাচ্যুত করতে ভালো উকিল ধরার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মো. মাহবুবুর রহমানের (পটুয়াখালী-৪) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদে এ পরামর্শ দেন মন্ত্রী। এর আগে প্রশ্নকর্তা বলেন, আমরা সংসদ সদস্যরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হই। আবার যে করেই হোক অন্তবর্তীকালীন সরকার হোক আর নির্বাচনের মাধ্যমে হই ক্ষমতা ছাড়তে হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মামলা করে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতা দখল করে থাকেন। এ বিষয়ে কোন সমাধান হবে কি না?

এ প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হন। আইন মোতাবেকই তারা নির্দিষ্ট সময় তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সর্বক্ষেত্রে এভাবে ঘটে না। কোন কোন সময় কেউ বিক্ষুদ্ধ হয়ে কোর্টে মামলা করেন, হাইকোর্টে রিট করেন, পরে হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করে দেন। হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করে দিলে আমাদের এই আদেশ ‘ভ্যাকেট’ (আদেশ স্থগিতাদেশ) করা ছাড়া আমাদের হাতে কোনো ব্যবস্থা নাই। তিনি আরো বলেন, প্রশ্নকর্তাকে অনুরোধ করবো যে যে জায়গায় বিধি নিষেধ আরোপ করা আছে। সেসব জায়গায় একটু চেষ্টা তদবির করে ভালো উকিল নিয়ে যদি মামলাটা চালান তাহলে ‘ভ্যাকেট’ করানো খুব একটা কষ্টকর হবে না। 

 

বিডি প্রতিদিন/২৪ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর