২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৫:০৮

'কাজের মাধ্যমেই নতুন কমিশন নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবে'

রাহাত খান, বরিশাল:

'কাজের মাধ্যমেই নতুন কমিশন নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবে'

ফাইল ছবি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনার উদ্যোগ নেয়ার সময় এখনো আসেনি। সেই পরিস্থিতি যখন আসবে তখন এটা দেখা যাবে। এটা ইস্যু ভিত্তিক হবে। তখন যে পরিস্থিতি আসবে, সেই পরিস্থিতিতে কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, অন্যান্য কমিশনার এবং সচিবের সাথে আলোচনা করে তখন একটা পজেটিভ ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। এই মুহূর্তে সেটা বলা যাচ্ছে না। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো বরিশালে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে এই প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। 

নতুন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ এবং কমিশনের প্রতি বিরোধী জোটের আস্থা নেই- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, নতুন কমিশনের বিগত পরিচয় এবং কর্মকাণ্ড যা-ই থাকুক না কেন, এই কমিশন কাজ করবে, এই কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করবে এবং আস্থা ফিরিয়ে আনবে।ভবিষ্যতে কোন ব্যক্তি কিংবা দলের কাছে মাথা নত না করে কঠোরহস্তে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালানা করে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবে নির্বাচন কমিশন। কিছুদিন পর তারাও (বিরোধী জোট) বুঝতে পারবে, নতুন কমিশন কতটুকু নিরপেক্ষ। 

তিনি বলেন, নির্বাচনের গুনগত মানোন্নয়নের জন্য বর্তমান কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। আইনগতভাবে এখন স্থানীয় সরকার এবং জাতীয় পর্যায়ের সব নির্বাচনেই রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোই নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য বস্তু। রাজনৈতিক দলগুলো যদি অংশগ্রহণ করেন, তারা যদি যোগ্য প্রার্থী দেয় এবং তারা যদি নির্বাচনী বিধিবিধান মেনে চলেন, তারা যদি সহযোগীতা করেন তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে। কোন কেন্দ্রে অনিয়ম কিংবা জাল ভোটের সংবাদ পাওয়ার পরও রিটার্নিং অফিসারের বৈধ পাশধারী সাংবাদিকদের কেন্দ্রে প্রবেশের সময় সংশ্লিস্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। কোন পরিস্থিতিতেই প্রিজাইডিং অফিসারকে অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না সাংবাদিকরা। 

ব্রিফিংয়ে আগামী ৬ মার্চ বরিশালের গৌরনদী ও বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন চেয়ে নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহবান জানান সিইসি। তিনি বলেন, কোন কেন্দ্রে অনিময় হলে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার কিংবা রিটার্নিং অফিসার যদি মনে করেন, আইনের ব্যতয় হয়েছে, তাহলে তারা তাৎক্ষণিক নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারবেন। নিয়মের ব্যতয় হলে সংশ্লিস্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা অভিযুক্ত হবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। 

আগামী ৬ মার্চের নির্বাচনে বরিশালের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাই এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে কমিশন আশাবাদী। নির্বাচনে কমিশন জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। 

আগামী বিভিন্ন নির্বাচনে ডিজিটাল ভোটিং মেশিন (ডিভিএম) ব্যবহার নিয়ে সিইসি বলেন, এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কোথাও কোথাও টেস্ট কেস হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা, সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের সাথে মতবিনিময়ের পরই ডিভিএম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস, রেঞ্জ ডিআইজি শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমীন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে গৌরনদী ও বানারীপাড়া উপজেলার পরিষদের উপ-নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী, প্রার্থীর সমন্বয়কারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী, ভোটার এবং সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রশাসনের সহযোগীতা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর