২৩ এপ্রিল, ২০১৭ ১৪:১৮

তুষার ঝড়ের কারণে বেসক্যাম্পেই মৃদুলা, চলছে প্রামাণ্যচিত্রের শুটিং

শামছুল হক রাসেল

তুষার ঝড়ের কারণে বেসক্যাম্পেই মৃদুলা, চলছে প্রামাণ্যচিত্রের শুটিং

'‌‌গতকাল থেকে ভারি তুষারপাত হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর ক্যাম্পের বরফ সরানো হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে একটি প্রামাণ্যচিত্রের শুটিং। আপাতত এখানেই অবস্থান করছি, আবহাওয়া অনূকুলে এলে ফের উপরে রওনা দিবো' এভাবেই এভারেস্টের বেসক্যাস্প থেকে ওয়্যারলেস ফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিজের অভিযাত্রার আপডেট জানান মৃদুলা। 

গত ১৫ এপ্রিল শনিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় হিমালয়ের বহু কাঙ্ক্ষিত বেসক্যাম্পে পৌঁছান তিনি। ভূমি থেকে ৫ হাজার ৩৬৪ মিটার, অর্থাৎ ১৭ হাজার ৫৯৮ ফুট ওপরে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের এই তরুণী। এরই মাঝে দলের অন্যানদের সঙ্গে পরবর্তী ডেস্টিনেশন দিকে রওনা দিলেও বারবার ফিরে আসতে হচ্ছে বেসক্যাস্পে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এভারেস্টের চূড়ায় আরো একবার উড়তে পারে বাংলাদেশের পতাকা। 

 

অর্থাৎ নিশাত মজুমদার এবং ওয়াসফিয়া নাজরীনের পর এবার হিমালয়ের রানী হতে যাচ্ছেন মেডিকেল ছাত্রী এই মৃদুলা। মৃদুলা আরো বলেন, গতকাল থেকে অনেকটা ডে-অফ কাটাচ্ছি। এরই মাঝে জাপান-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে নির্মিতব্য একটি প্রামাণ্যচিত্রের শুটিং চলছে বেসক্যাম্পে। সব মিলিয়ে ভালো আছি, আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

বেসক্যাম্পে পৌঁছানোর সময় থেকেই ভীষণ ঠাণ্ডা ও তীব্র বাতাসের সঙ্গে লড়াই হচ্ছে তাদের। কিন্তু সে সব তার কাছে কিছুই নয়। এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন এ বিষয়টিই তার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। ফোনেও অনেকটা উৎফুল্ল মনে হচ্ছিল তাকে।

এর আগে ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার বেসক্যাম্পে ব্ল্যাক ডে পালন করেন মৃদুলা। ২০১৫ সালের এই দিনে এভারেস্টে ভূমিকম্প ও তুষারধসে ১৮ জন শেরপা প্রাণ হারান। নিখোঁজ হন আরও বেশ কয়েকজন। তাদের স্মরণে নেপালে পালন করা হয় ব্ল্যাক ডে। তাই হিমালয় যাত্রীরাও তাদের স্মরণ করেছেন বেসক্যাম্প থেকে।

ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মৃদুলা আমাতুন নূর। জন্ম ঢাকায় হলেও শেকড় ফেনীর পরশুরাম উপজেলার গুথুমা গ্রামে। বাবা আবু হেনা ও মা ফরিদা আক্তারের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মৃদুলাই বড়। বাবা-মা অবশ্য শুরুতে মেয়ের এই ডান পিটেপনা আবদার মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু মেয়ের আগ্রহ আর অদম্য বাসনার কাছে হার মেনেছেন শেষ পর্যন্ত। এখন তারাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন মেয়ের চূড়ান্ত সাফল্যের খবরে। 

ছোটবেলা থেকেই ডানপিটে ছিলেন মৃদুলা। একটু বড় হওয়ার পর নেপাল ও ভারতের বেশ কিছু পর্বতারোহী বন্ধুর কাছে পর্বতারোহণের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। 

গত বছর অক্টোবরে হিমালয়ের শীতিধার চূড়ায় আরোহণের পর থেকেই মৃদুলার স্বপ্ন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করা। এখন তিনি তার স্বপ্নের কাছাকাছি। মৃদুলা মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে সক্ষম হলে তিনি হবেন তৃতীয় বাংলাদেশি নারী। এর আগে নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন বাংলাদেশের হয়ে এভারেস্ট জয় করেন।

বিডি প্রতিদিন/২৩ এপ্রিল ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর