৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ১৭:২৭

'সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন হলে বাতিল করবে সুপ্রিম কোর্ট'

জবি প্রতিনিধি

'সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন হলে বাতিল করবে সুপ্রিম কোর্ট'

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা বলেছেন, জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন করে ভবিষ্যতে সংবিধানের কোনো বিধান বা অন্য কোনো আইন সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে তা বাতিল করতে সুপ্রিম কোর্ট পিছপা হবে না।

রবিবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও প্রথম ব্যাচের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে দেশে আইনি শাসন হচ্ছে না। দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য ঐকমত্য হলেই সংবিধান সংশোধন করতে পারেন। শুধু দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যই নয়, পুরো সংসদ মিলে যদি সংবিধানকে পরিবর্তন করে দেয়, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে এতে সংবিধানের মূল ভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে, আইনের শাসনও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে ও জনগণের অধিকারের ওপর আঘাত করেছে তাহলে সংসদের ওই সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্ট বেইআইনি ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন তাতে সুপ্রিম কোর্টকে জুডিশিয়াল রিভিউ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের এই ক্ষমতাবলেই সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনী, সপ্তম, অষ্টম ও ১৩তম সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছে। এতে কোনো দ্বিমত নেই।

ভূমি আইন বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক আইনজীবী এবং বিচারপতিরাও ভূমি আইন বিষয়ে অজ্ঞ। ভুমি আইনের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। উচ্চ আদালতেও এ সংক্রান্ত বিচারপতির সংখ্যাও কম। আইনজীবীরা চায় ফৌজদারি মামলা নিয়ে কাঁচা টাকা 'ইনকাম' করতে। আত্মমর্যাদা সম্পন্ন উন্নত দেশ হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনের শাসনের সঠিক বাস্তবায়ন। আইনের শাসন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হলে এবং দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মেনে চললে সভ্য ও উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়া সম্ভব। এজন্য আইন, শাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে হবে। সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য আইনের শাসনের প্রতি সকলের শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে বিচার বিভাগের অধীনস্থ বিভাগসমূহে নানা সমস্যা রয়ে গেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন ভূমি সংক্রান্ত নানা আইনের অজ্ঞতার কারণে প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ভূমি আইন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রীস্টিন রিচার্ডসন-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য প্রদান করেন ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও শিক্ষাথীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/৩০ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর