সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে 'গ্রিক দেবী'র যে ভাস্কর্য গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে তার ভাস্কর মৃণাল হক। ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার পর দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, আমাকে এই ভাস্কর্যটি অপসারণ করতে চাপ দেয়া হয়েছে। এটি বানাতে আমার সময় লেগেছিল প্রায় দুই মাস। এখন কেউ কারও প্রয়োজনে তাদের স্বার্থে ভাস্কর্যটি সরাচ্ছে। আজ স্বাধীনভাবে কথা বলা যাচ্ছে না। আজ আমরা হেরে গেলাম। আমরা বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে হার মানলাম। এর থেকে বড় পরাজয় আমাদের আর কিছু আছে?
গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন একদল ওলামার সঙ্গে গণভবনে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। রমজানের আগেই ভাস্কর্যটি সরানোর দাবিতে গত ১৮ মে বিবৃতি দিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। গতকাল রাতে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার সময় নির্মাতা মৃণাল হকও উপস্থিত ছিলেন। তাকে এ সময় অশ্রুসিক্ত দেখা যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাস্কর্যটি সরানোর কাজ শুরু হয়। শেষ রাতেও কাজ চলছিল। এসময় সুপ্রিম কোর্টের সব কটি ফটক বন্ধ রাখা হয়।
মৃণাল হক বলেন, এজন্যই কি আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম? এদের বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলন করে স্বাধীনতা এনেছি। আমরা সেই স্বাধীনতাটা ভোগ করতে পারছি না, পারব না। আজকে তারাই বিজয়ী। এই রাজাকার আলবদর যারা আজকে আমাদের সাংস্কৃতি, পড়ালেখা সবকিছু বিরোধিতা করে আসছে তাদের কাছে আমরা হার মানব কেন? আমি অতি সাধারণ মানুষ। কে সরাতে বলেছে সে কথা বলার সাহস আমার নেই। সোজা কথা যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশিদের জন্যে গালে জুতার বাড়ি খাওয়ার মতো এটা একটা খারাপ ব্যাপার। যার থেকে লজ্জা আর হতে পারে না। অনেক স্বাধীনতাকামী মানুষ এটার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে। আজকে আমি বক্তব্য দেব কাল থেকে আমার রাস্তায় চলা বন্ধ। আমাদের এত বড় একটা পরাজয় আর হতে পারে না।
বিডি প্রতিদিন/২৬ মে, ২০১৭/ফারজানা