২৯ মে, ২০১৭ ১৬:৪৭

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় মংলায় ১২ জাহাজ

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট :

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় মংলায় ১২ জাহাজ

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তাণ্ডব মোকাবেলায় চট্রগাম নৌঘাটি থেকে ১০টি যুদ্ধ জাহাজ ও চট্টগ্রাম কোষ্টগার্ডের ২টি জাহাজকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে মংলায় নিয়ে আশা হয়েছে। এছাড়া মংলা বন্দরের সব ধরনের পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বাগেরহাটসহ উপকূল জুড়ে ঘূর্ণিঝড় মোরো'র আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। বইছে ঝড়ো হাওয়া। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এছাড়া মংলা বন্দর জেটি ও আউটার এ্যাংকরেজে অবস্থানরত ১১টি জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রেখেছে। 

এছাড়া আবহাওয়া বিভাগ সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাট ও মংলা বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই অবস্থায় মংলা বন্দর জেটিতে অবস্থানরত সব জাহাজকে নিরাপদ আশ্রয়ে আউটার এ্যাংকরেজে নোঙ্গর করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিএনএস মংলা নৌ ঘাটির সকল যুদ্ধ জাহাজ ও নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। 

সোমবার সকাল থেকেই উত্তাল বঙ্গোপসাগরে টিকতে না পেরে সুন্দরবনের দুবলা, হিরনপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী এলাকার ছোট নদী ও খালে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা ট্রলারগুলো। সুন্দরবন বিভাগের সকল নৌযান, কর্মকর্তা কর্মচারী ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলি নিরাপদ স্থানে রাখতে বলা হয়েছে। 

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার অলিউল্লাহ জানান, উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় চট্রগাম নৌঘাটিতে থাকা ১০টি যুদ্ধ জাহাজ ও চট্টগ্রাম কোষ্টগার্ডের ২টি জাহাজকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে সোমবার দুপুরে মংলায় নিয়ে আশা হয়েছে। মংলা বন্দরের সব ধরনের পন্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বিএনএস মংলা নৌঘাটি ও মংলা কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র থেকে বলা হয়েছে, তাদের সকল জাহাজসহ নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বঙ্গোপসাগর থেকে আশ্রয় নেয়া ৫ শতাধিক ফিশিং ট্রলারকে দুবলা, হিরনপয়েন্ট, কটকা, কচিখালীসহ বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট নদী ও খালে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবনে পর্যটন মৌসুম না হওয়ায় কেবলমাত্র সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, জেলে ও মৌয়ালদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগের সকল নৌযানগুলো নিরাপদে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। 

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, জেলার ৯টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সকল আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়ে ঘুর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাগেরহাট জেলার সকল দ্বীপ, চর ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত সকল মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলা ও প্রতিটি উপজেলা, মংলা বন্দর, সুন্দরবন, কোষ্টগার্ড ও নৌবাহিনী কন্ট্রোল রুম খুলেছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় রেডক্রিসেন্টসহ সেচ্ছাসেবক ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/ ২৯ মে, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর