৩০ মে, ২০১৭ ১৬:১৬
কাজী ফিরোজ রশিদের প্রশ্ন

'করের টাকা কারা লুটপাট করছে?'

নিজস্ব প্রতিবেদক

'করের টাকা কারা লুটপাট করছে?'

ফাইল ছবি

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ  বলেছেন, বাজেটে তো কর বাড়াবেন। কিন্তু করের টাকা কোথায় যাচ্ছে? হাজার হাজার কোটি টাকা অবাধে লুটপাট হচ্ছে। কারা লুটপাট করছে? কারা এর জন্য দায়ী? আজ পর্যন্ত এই সংসদে এর কোনো জবাব পেলাম না। এসবের হিসাব কই? সংসদে এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী কেন চুপ থাকেন, তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?

দশম জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

কাজী ফিরোজ রশিদ আরও বলেন, সরকারের কাছের লোক না হলে লুটপাট করতে পারে না। ভিআইপিরা লাইসেন্স নিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করছেন। ব্যাংকেও অবাধ লুটপাট চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ৭টি ব্যাংক মূলধন খেয়ে ফেলেছে। এরা মূলধন তো হারিয়েছেই, আরও ১৬ হাজার টাকা ঘাটতিতে পড়েছে। একদিন পরই আমাদের বাজেট পেশ করা হবে। সেখানেও ঘাটতি বাজেট দেয়া হবে। এই যে ঘাটতি, জনগণ কেন এটা মেটাবে? অর্থনীতিতে একটি অশনি সংকেত চলছে দীর্ঘ দিন যাবত। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিলাম কিন্তু এবার খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। তার মধ্যে ব্যাংকে অবাধ লুটপাট চলছে। কৃষি ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রুপালী এবং অগ্রণী ব্যাংক ছাড়াও মূলধন ঘাটতির তালিকায় বেসরকারি ব্যাংক আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক তালিকা রয়েছে। এর আগে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ ব্যাংকে ৮’শ কোটি টাকা বিদেশ পাচার হয়ে গেছে। টাকা পাচার হলেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন আসে। এর ফলাফল আমরা কখনও দেখতে পাই না। এর মধ্যে আরও দুটি ঘটনা ঘটে ওটা ধামাচাপা পড়ে যায়। এই ধামাচাপা পড়তে পড়তে ব্যাংকগুলোই একদম ধামাচাপা পড়ে গেছে। ব্যাংকের উপর জনগণের কোনো বিশ্বাস নেই। 

সাবেক মন্ত্রী ফিরোজ রশিদ বলেন, ক্ষমতায় থাকলে দুটি জিনিসের অভাব হয় না। একটা চাটুকারিতা আরেকটা বাঁশ দেয়া। হিমালয়ের উপর ওঠে কেউ মনে করতেই পারে আকাশ অনেক কাছে। কিন্তু আকাশ তো অত কাছে না। সরকার মনে করছে জনগণ অনেক কাছে। কিন্তু তা নয়। জনগণ এগুলো দেখে একজনকে বেছে নেয়। সামনে নির্বাচন, কোথাও সুশাসনের কোনে ইঙ্গিত আমরা দেখি না। কোথাও সুশাসন নেই। যদি সুশাসন থাকত, দেশে এই অরাজকতা থাকত না। 

এসময় তিনি নিজ দলের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডের সমালোচনা করে বলেন, আমরা সরকারি দলও না বিরোধী দলও না। কারণ জনগণ আমাদের (জাপা) বিরোধী দল মনে করে না। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলতে পারি না। সংবধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী আমরা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারি না। 

ব্যাংকে অবাধ লুটপাট চলছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকলে কিছু লোকের চেতনা জাগে। এরা চাটুকার। শুধু মুখে বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আগে এরা কোথায় ছিল, এখন তাদের কথা কেন শোনা হচ্ছে? তারা সব টাকা কুক্ষিগত করছে, বিদেশ পাচার করছে। ভিআইপি লাইসেন্স নিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করছে। 

 

বিডি প্রতিদিন/৩০ মে, ২০১৭/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর