২২ জুন, ২০১৭ ১৬:৪১

সংবাদপত্র শিল্পের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করুন: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সংবাদপত্র শিল্পের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করুন: তথ্যমন্ত্রী

সংবাদপত্র শিল্পের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশের গণমাধ্যমের বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রস্তাবিত বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করুন।একইসঙ্গে ব্যাংকের আবগারি শুল্কের ক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থা বহাল না করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানান তিনি। আজ সংসদ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব আহ্বান জানান।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে জঙ্গি ও জঙ্গির সঙ্গীকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। অর্থনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে সমৃদ্ধি অর্জনের যুদ্ধ। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করার যুদ্ধ। এই দুই যুদ্ধের মধ্যেই অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটকে যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেখে বিশ্লেষণ করা উচিত। এসময় অর্থমন্ত্রীর সফলতার প্রশংসা করে জাসদের এই নেতা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়বে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাজেটে দারিদ্র্য কমেছে, মধ্যবিত্তের সংখ্যা বেড়েছে, লাখপতি ও কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে, মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৬০২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি বাজেটের দুর্বলতার বিষয়গুলো উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, কৃষি রাজস্ব কম হচ্ছে, সমবায় অবহেলিত, হাওরের গুরুত্ব দিলেও চরাঞ্চল, বিল ও পাহাড়ের গুরুত্ব একটু কম দেয়া হচ্ছে। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখন দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকের টাকা ও এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার মতো অপরাধীরা জামিন পেয়ে আদালত থেকে বিজয়ের চিহ্ন দেখিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসে। এটা জাতির জন্য লজ্জার বিষয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকের লুটপাট অব্যাহত রয়েছে, দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে এগুতে হলে দরকার হবে সুশাসন। সুশাসন থাকলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বেড়ে যাবে। আর ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়লে দেশের অর্থনীতি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশে সুশাসন নিশ্চিত করবেন। এটা দুর্নীতি কমাবে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।

৭ বছরে ৭ শতাধিক পত্রিকার নিবন্ধন

এরআগে সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এমপিদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী। বজলুল হক হারুনের (ঝালকাঠি-১) প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানান, গত ৭ বছরে ৭ শতাধিক পত্রিকার নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৩১টি স্যাটেলাইট চ্যানেল, ২৪টি এফ.এম বেতার এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও'র অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী আরো জানান, বর্তমানে সরকারি ৩টি টেলিভিশন চ্যানেল, ২১টি এফ. এম বেতার এবং ১৭টি কমিউনিটি রেডিও সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসময় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য একটি দায়বদ্ধ ‘সম্প্রচার কমিশন’ গঠনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘সম্প্রচার আইন, কথা উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে দুস্থ ও অসুস্থ সাংবাদিকদের অনুকূলে বিগত পাঁচ বছরে ৮১৯ জনকে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। 

বিশ্বের ৪৯টি দেশে বিটিভি ও সংসদ টিভি সম্প্রচারিত হচ্ছে 

সরকারি দলের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বর্তমানে হংকং ভিত্তিক ‘এশিয়া এসএটি-৭’ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিশ্বের ৪৯টি দেশে বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড ও সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে ‘টোটাল ক্যাবল, ইউএসএ’ কর্তৃক ‘আইপিটিভি’র মাধ্যমে বিটিভির অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় চুক্তি নবায়নের কার্যক্রম বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ওয়েব টিভি'র মাধ্যমে সারাবিশ্ব থেকেই বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড দেখা যায়। বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসমূহের বেশ কয়েকটি ‘আইপিটিভি ও ওয়েব টিভি’র মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে প্রচারিত হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর