২১ নভেম্বর, ২০১৭ ২০:২৫

ক্যাবিনেট থেকে ব্যাংক কোম্পানি আইন হুবহু পাসের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্যাবিনেট থেকে ব্যাংক কোম্পানি আইন হুবহু পাসের সুপারিশ

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পরপর দুই বৈঠকেই উপস্থিত না থাকায় ক্যাবিনেট থেকে যেভাবে এসেছে, সেভাবেই ব্যাংক কোম্পানি আইন বিলটি পাস করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। 

সংসদ ভবনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২২তম বৈঠকে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ সংসদে বিলটি পাশ করার সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান, মো. শওকত চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন এবং আখতার জাহান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। 

বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের এবং সংসদে উত্থাপনের পর নতুন আইনটি বেসরকারি ব্যাংকে ‘পরিবারতন্ত্র’ কায়েমের সুযোগ তৈরি করে দিবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। তখন বলা হয়েছিল কমিটি বৈঠকে বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিলটি পাসের সুপারিশ করে রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছি। ক্যাবিনেট থেকে বিলটি যেভাবে এসেছে, সেভাবেই তা পাসের সুপারিশ করেছে কমিটি।’

গত ১২ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করার পর তা অধিকতর পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে এ বছরের ৭ মে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়। অক্টোবর মাসে বিলটি নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনার কথা ছিল। তবে ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উপস্থিত না থাকায় আলোচনা হয়নি। ওই বৈঠকে কমিটির সভাপতি জানতে চান, কোন যুক্তিতে আইনের সংশোধন করা হচ্ছে? কিন্তু অর্থমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। 

প্রস্তাবিত আইনে টানা ৯ বছর পরিচালক পদে থাকার বিধানও রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুই জন সদস্য একটি ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন। আর তিন বছর করে পর পর দুই মেয়াদে মোট ছয় বছর একই ব্যক্তি পরিচালক হতে পারেন। এরপর তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও পরিচালক হতে পারেন।

জানা গেছে, বিলটি দ্রুত পাসের লক্ষ্য নিয়েই কমিটি তড়িঘড়ি করে রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘পাসের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদনটি বুধবারই সংসদে উপস্থাপন করবো আমরা। 

সংসদ সচিবালায় জানায়, বৈঠকে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে আনীত বিলটির খুঁটিনাটি পরীক্ষা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ সংসদে পাশ করার সুপারিশ করা হয়। 

জানা যায়, আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীতে পরিচালকের মেয়াদ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পরে কোনও ব্যক্তি ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালকের পদে টানা ৯ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না। 

একই ধারায় বলা হয়, টানা ৯ বছর পদে থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিন বছর অতিবাহিত না হলে তিনি পরিচালক পদে পুনঃনিযুক্তির জন্য যোগ্য হবেন না। এই ধারার ব্যাখ্যায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি পরিচালক পদে তিন বছরের চেয়ে কম সময় না থাকলে ওই সময় টানা ৯ বছরের অন্তর্ভুক্ত হবে। 

উল্লেখ্য, ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ পাস হওয়ার পর থেকে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিচালকদের মেয়াদ সম্পর্কিত ধারাটি পাঁচবার সংশোধন করা হয়েছে। এই ধারায় ব্যাংকের পর্ষদে একজন পরিচালক কত বছর পরিচালক থাকতে পারবেন, সে কথা বলা রয়েছে। সর্বশেষ ধারাটি সংশোধন করা হয় ২০১৩ সালে। এবার ষষ্ঠবারের মতো সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে।

বিডি প্রতিদিন/২১ নভেম্বর ২০১৭/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর