২১ মে, ২০১৮ ১১:১১
মাদকবিরোধী অভিযান

রাতে ৭ জেলায় 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৯

অনলাইন ডেস্ক

রাতে ৭ জেলায় 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৯

দেশের ৭ জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ৯ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে শুধু যশোরেই নিহত হয়েছেন ৩ জন। যদিও এই তিনজন নিজেদের মধ্যে 'বন্দুকযুদ্ধে' মারা গেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।

রবিবার দিবাগত রাতে গাজীপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গায়, রাজশাহী, নরসিংদী ও টাঙ্গাইলে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

গাজীপুর
জেলার টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রেজাউল ইসলাম ওরফে বেসতি রনি নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছে পুলিশের দুই সহকারি উপ-পরিদর্শক। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত রনি টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টঙ্গী মডেল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পুলিশের একটি দল টঙ্গীর নিমতলী এলাকায় মাদক উদ্ধারের অভিযানে যায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ রনির মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এসময় সেখান থেকে কয়েক পুঁড়িয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়। 

যশোর 
শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গা এলাকা থেকে রবিবার রাতে তিনজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যশোর কোতয়ালী থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা শুনে পুলিশের দুটি টিম ওই স্থান দুটিতে যায়। এসময় শেখহাটির নওয়াব আলীর খেজুর বাগান নামক স্থান থেকে দুইটি মৃতদেহ এবং চারশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে শহরতলীর খোলাডাঙ্গা মাঠের মধ্যে থেকে আরেকটি মৃতদেহ ও একশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থলদুটি থেকে দুইটি পিস্তল ও গুলির খোসা পাওয়া গেছে বলে জানান ওসি। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা জানান, ভোর ৪টা ৫ মিনিটে যশোর কোতয়ালী থানার উপপরিদর্শক তরুণ কুমার গুলিবিদ্ধ একজনকে এবং যশোর উপশহর ফাড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নিহত তিনজনেরই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং চেহারা বিভৎস হয়ে গেছে। লাশ তিনটি হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা
জেলার জীবননগর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' জনাব আলী (৩২) নামের এক চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। নিহত জনাব আলী উথলী গ্রামের আমতলা পাড়ার জামাত আলীর ছেলে। রবিবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে উপজেলার উথলী গ্রামের সন্যাসীতলা মাঠের মধ্যে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ রহমান জানান, বন্দুকযুদ্ধে নিহত জনাব আলীর বিরুদ্ধে জীবননগরসহ বিভিন্ন থানায় অন্তত ১১টি মাদক মামলা রয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি শর্টগান, দু’টি কার্তুজ, ৩টি রামদা এবং ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

ঝিনাইদহ
জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ছবদুল মন্ডল (৪৫) নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কালিগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের সড়কের নরেন্দ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার গোলাম মোর্শেদ জানান, র‌্যাবের একটি দল কালিগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের নরেন্দ্রপুর এলাকায় চেকপোস্ট বসায়। ওই সড়ক দিয়ে একটি মোটরসাইকেল যাওয়ার সময় থামার জন্য সংকেত দেওয়া হয়। মোটরসাইকেলটি না থেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুঁড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলে ছবদুল মন্ডল নামে এক মাদক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ছবদুল মন্ডল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একশ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ পিস ইয়াবা, ২ রাউন্ডসহ নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজশাহী
জেলার বেলপুকুর থানাধীন ছোট জামিরা এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' শীর্ষ মাদক বিক্রেতা লিয়াকত নিহত হয়েছেন। রবিবার গভীর রাতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড তাজা গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব-৫ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

টাঙ্গাইল
জেলার ঘাটাইলে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আবুল কালাম আজাদ নামের এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব-১২ এর এক মাদক বিরোধী অভিযানকালে এ ঘটনা ঘটে। 

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান জানান, ঘাটাইল এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানকালে মাদক বিক্রেতারা র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে মাদক বিক্রেতা আবুল কালাম আজাদ গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, ১৫শ পিস ইয়াবা এবং একশ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

নরসিংদী
জেলার পলাশ উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ইমান আলী (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার ভোর রাতে উপজেলার ঘোড়াশাল খালিশারটেক এলাকায় এ কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-১১ এর কম্পানি কমান্ডার মো. জসিম উদ্দিন জানান, নিহত ইমান আলী নরসিংদীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও নিয়ন্ত্রক। বন্দুকযুদ্ধের পর ইমান আলীর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদন তৈরিতে স্ব স্ব জেলার প্রতিনিধিরা সহযোগিতা করেছেন।

বিডি-প্রতিদিন/২১ মে, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর