১২ জুলাই, ২০১৮ ২০:০৬

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় লঙ্ঘন করতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় লঙ্ঘন করতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা হাইকোর্টের রায়েই রক্ষিত রয়েছে। হাইকোর্টের রায় তো আমি লঙ্ঘন করতে পারি না। এটা করলে তো আদালত অবমাননায় পড়ে যাবো। এটা কেউ করতে পারবে না। অন্যদিকে যারা আন্দোলনের নামে ভিসি’র বাড়ি ভাংচুর করেছে, আগুণ দিয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের তো ছাড়া যায় না, ছাড় দেবো না। যতই আন্দোলন করুক। এটা বরদাস্ত করা যায় না।   
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কোটা সংস্কার আমরা করবো। আমি তো বললাম সব বাদ দিতে। কিন্তু হাইকোর্টের রয়েছে। হাইকোর্টের রায় আমি অবমাননা করলে তখন তো আমি আদালত অবমাননায় পড়ে যাবো। এটা কেউ করতে পারবে না। আমরা মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে দিয়ে একটা কমিটি করে দিয়েছি। তাহলে এদের অসুবিধাটা কোথায় আমার সেটাই প্রশ্ন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, কোটা নিয়ে যারা আন্দোলন করছে, তারা যে কি চায় বারবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে, সেটা কিন্তু সঠিকভাবে তারা বলতে পারে না। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বুধবারই বলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের রায় রয়েছে। যেখানে হাইকোর্টের রায় আছে যে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ওইভাবে সংরক্ষণ থাকবে। আমরা হাইকোর্টের রায় কীভাবে লঙ্ঘন করবো? কীভাবে হাইকোর্টের রায় বাদ দেব? সেটা তো আমরা করতে পারছি না। তবে তো হাইকোর্টের রায় অবমাননা হবে। তবে আমি যেটা করে দিয়েছি, কোটা যেটাই থাকুক, কোটা পূরণের সাথে সাথে যে জায়গায় খালি থাকবে সেখানে মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। গত কয়েক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চালু আছে এবং সেটাই করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভিসির বাড়িতে যারা ভাংচুর করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে- তাদের তো ছাড়া হবে না। তাদের ছাড়া যায় না। জড়িতদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তদন্ত করা হচ্ছে। অনেকে স্বীকারও করেছে। যেখানেই যারা থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে, তারা যতই আন্দোলর করুক। তিনি বলেন, অনেক জায়গায় চাকরি খালি আছে, যারা মেধা তালিকায় থাকছে, কেউই বাদ যাচ্ছে না। যারাই মেধাবী তারা কোন কোনভাবে চাকুরি পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, দেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখেছে। কোন অশুভ শক্তি দেশের জনগণের এই সুখটা কেড়ে না নিতে পারে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাবো। দেশে যেন আবারও মারামাটি, খিস্তিখেউর, আগুণ দিয়ে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মতো পরিবেশ ফিরে না আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নেতা বলেছেন ২ কোটি লোক অর্ধাহারে আছে, এটা ঠিক নয়। সামাজিক বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা ক্ষুধা মুক্ত বাংলাদেশে গড়েছি। এখন দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমাদের  চ্যালেঞ্জ। তিনি আরো বলেন, মিলিটারী ডিক্টেররেরা ক্ষমতা দখল করে উপকারের বদলে দেশের সর্বনাশ করে গেছে। মতিঝিলে একসময় ঝিল ছিল। আইয়ুব খান তা বন্ধ করে দেয়। সেগুনবাগিচা ও পান্থপথে আগে খাল ছিল। জেনারেল এরশাদ সাহেব এসে সেই খাল বন্ধ করে দিয়ে বক্সকালভার্ট নির্মাণ করেন। এতে করে পানি এখন আরা নামতে পারে না। জিয়া এয়ারপোর্ট থেকে দীর্ঘরাস্তায় দু’ধারে থাকা সকল কৃষ্ণচুড়া গাছ কেটে ফেলে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে ক্ষমতায় আসতে পারলে আমরা সকল বক্স কালভার্ট ভেঙ্গে ফেলে নীচে খাল এবং উপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেব। এসময় তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসী যদি মনে করেন তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ভুল করেননি, তারা দেশকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে- তাহলে দেশের জনগণ আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও তাদের সেবার করার সুযোগ দেবেন। আমাদের বিরোধী দল এবং যারা আছে আমি আশা করি সকলে নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশকে আমরা বিশ্বের দরবারে যে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছি সেটা আমরা ধরে রেখে এগিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর