শিরোনাম
১৪ জুলাই, ২০১৮ ১৮:৫০

বাংলাদেশ-ভারত পাশে থেকে সব হুমকি মোকাবিলা করবে : রাজনাথ সিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বাংলাদেশ-ভারত পাশে থেকে সব হুমকি মোকাবিলা করবে : রাজনাথ সিং
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাসী শক্তির মোকাবিলায় সবসময় হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে। শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, সমগ্র অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ একটি গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ প্রশংসা করছি। যেকোনো হুমকি বাংলাদেশ-ভারত পাশে থেকে মোকাবিলা করবে।’ 
 
শনিবার দুপুরে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী ভবন উদ্বোধন শেষে বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
 
রাজনাথ সিং বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশ অভিন্ন ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি, পরিবার ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ এক বিশেষ সম্পর্ক বহন করে। উভয় দেশ একটি সমন্বিত বাহিনী হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করেছে, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে পারষ্পরিক আস্থার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আমাদের সৈনিকেরা একসঙ্গে রক্ত বিসর্জন দিয়েছে। আমাদের এই বন্ধন ভ্রাতৃত্বের ও চিরন্তন এবং সময়ের পরীক্ষায় তা অটল থাকবে। ভবনটির নামই বলে দিচ্ছে আমাদের সম্পর্কের মূল সুর। আজ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি উচ্চতায় পৌঁছেছে। আর এ সম্পর্কের বর্তমান অবস্থাকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোনালী অধ্যায় বলে আখ্যায়িত করেছেন।’
 
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে আমরা বাংলাদেশের ৮৬১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য গান্ধীনগরের গুজরাটে ফরেনসিক সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি, গাজিয়াবাদের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং মেঘালয়ের নর্থ ইস্টার্ন পুলিশ একাডেমীতে নানা বিশেষায়িত পাঠ্যক্রমের ৩০০টি বিশেষায়িত প্রস্তাব করা হয়েছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমী এবং বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর মধ্যে সম্পাদিত সহযোগিতা স্মারকের মাধ্যমে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী বিনিময় এবং সহযোগিতা ও পারস্পরিক আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পারস্পরিক স্বার্থের ওপর দাঁড়িয়ে আছে যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক।
 
রাজনাথ সিং বলেন, সারদায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী শুধু ইতিহাসের স্বাক্ষী নয়, ইতিহাস সৃষ্টিতেও অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল যখন দখলদার বাহিনী এই প্রতিষ্ঠান আক্রমণ করে ২৪ জন পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক কর্মচারী তৎকালীন প্রিন্সিপাল এমএ খালেকের নেতৃত্বে লড়াই করে প্রাণ বিসর্জন দেন। এই পুলিশ একাডেমীতে ২০১৫ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যে মৈত্রী ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তা উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য এবং বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে আরও পেশাদার হিসেবে গড়ে তুলবে।
 
মৈত্রী ভবন উদ্বোধন শেষে সারদা পুলিশ একাডেমীর প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান এবং হায়দ্রাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমীর ডিরেক্টর ডি. রাণী ডলি বর্মনের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। 
 
এর আগে, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর অধ্যক্ষ নাজিবুর রহমান এনডিসি।
 
এসময় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধূরী ও স্বরাষ্ট্র সচিব ছাড়াও ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধণ শ্রিংলা, পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। 
 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অর্থায়নে এই ভবনটি নির্মিত হয়। বর্তমানে অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ২৮ হাজার বর্গফুটের এই ভবনটির নির্মাণকাজ ৫৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
 
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর