১৮ আগস্ট, ২০১৮ ১৫:২৫

ছোট গরুর চাহিদা বেশি

অনলাইন প্রতিবেদক

ছোট গরুর চাহিদা বেশি

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর পশুর হাটগুলো সরগরম হয়ে উঠছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাক ভর্তি করে আসা গরুতে ছেয়ে গেছে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বসা অস্থায়ী পশুর হাটগুলো। কেননা আর মাত্র তিনদিন পরেই ঈদুল আজহা। ফলে ক্রেতারাও গরু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন হাটগুলোতে। 

তবে এবার বড় গরুর চেয়ে ছোট গরুর প্রতি ক্রেতাদের নজর বেশি। ফলে ছোট গরুর ব্যবসায়ীরা দামও হাকাচ্ছেন ইচ্ছে মতো। সেই তুলনায় বড় গরুর ব্যবসায়ীরা ন্যায্য দাম না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। 

রাজধানীর হাজারীবাগ, গাবতলী, মোহাম্মদপুর বছিলা, পুরান ঢাকার ধোলাইখালসহ সিটি করপোরেশনগুলোর কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাটগুলো ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এই হাটগুলোতে মাঝারি ও ছোট আকারের গরু বেশি আনা হয়েছে। সেই তুলনায় বড় গরু নেই বললেই চলে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুরান ঢাকার ধোলাইখাল হাটে গরু নিয়ে আসা সলিম, আশরাফসহ বেশ কয়েকজন ব্যাপারী বলেন, নানা রকম ঝুঁকির কারণে বড় গরু বর্তমানে হাটে কম আনা হচ্ছে। 

বড় গরুর ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে মফিজুল নামে অপর এক ব্যাপারী বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে বড় গরু আনতে খুব অসুবিধা। ট্রাকের মধ্যে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া গরু মোটাতাজাকরণ ওষুধের আতঙ্কের কারণে বড় গরুর গ্রাহক কম। ফলে বড় গরুর চেয়ে ছোট গরুতে ঝুঁকি কম, লাভও তুলনামূলক বেশি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বছিলা পুলিশ লাইন হাটে বুধবার রাতে নাটোর থেকে ৬টি গরু নিয়ে এসেছেন আসলাম নামে এক ব্যবসায়ী। তবে এখনো একটিও বিক্রি হয়নি। তবে ক্রেতারা যে দাম করছেন তাতেই খুশি তিনি। আরও দামের আসায় বসে আছেন তিনি। 

ওই ব্যাপারী বলেন, 'আমি যে ৬টি গরু নিয়ে আসছি তার কোনোটার দাম ৮০ হাজার বলছে, কোনোটা ৬০ হাজার। এখন পর্যন্ত বাজার দেখে আরও বেশি দাম হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে এই দাম থাকলেও বেচাবিক্রি করে শান্তি পাব!'

বছিলায় সড়কের পাশের পশুর হাটএকই সূর জামালপুরের মো. গুলজার হোসেনের। নিজের ঘরে পালা দুটি আর দুটি গরু কিনে মোট ৪টি গরু নিয়ে শনিবার সকালেই বছিলা হাটে উঠেছেন তিনি। গরুর দর-দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগেই নামছি। এরইমধ্যে যে দাম হচ্ছে তাতে খুশি। আমি যে দুটি গরু ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি সেই দুইটি এখানে নামার পর দাম হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার। এবার দাম ভালো হবে মনে হচ্ছে।

এছাড়া রাজধানীর হাজারীবাগ পশুর হাটেও মাঝারি ও ছোট আকারের গরু বেশি আনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দেশি জাতের গরুর সংখ্যাই বেশি। প্রতিটি খোয়ারেই দেশি গরু। আকারে ছোট এসব গরুর চাহিদাও বেশি। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে বিকেলের দিকে গরুও যেমন বাড়চ্ছে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে বলে জানান গরুর ব্যাপারীরা।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শাহিন আলম নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত ক্রেতারা ছোট ও মাঝারি আকারের গরু কিনতে হাটে এসেছি। তবে বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। ফলে না পারছি বড় গরু কিনতে না পারছি ছোট গরু কিনতে। 
 
আব্দুস জব্বার নামে এক খামারি বলেন, এবার গরুর দাম একটু বেশি। তবে আমাদের প্রফিট কম। কেননা আমরা গরু কিনেছি বেশি দামে, তাই বেশি লাভ করতে পারছি না। আমার খামারে ১৫০টি গরু আছে, যার ১৪৫টিই বিক্রির উপযোগী। তবে প্রত্যাশিত দাম না পেলে খামারেই রেখে দেব।

তিনি আরও বলেন, হাটে দেশি গরুর চাহিদা বেশি, দামও বেশি। আমার বেশ কয়েকটি দেশি গরু আছে। সেগুলো সবার আগে বিক্রি হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর