১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২১:২৬

লাইসেন্স ছাড়া কৃষিপণ্যের ব্যবসায় এক বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

লাইসেন্স ছাড়া কৃষিপণ্যের ব্যবসায় এক বছরের কারাদণ্ড

লাইসেন্স ছাড়া কৃষিপণ্যের বাজারকারবারি, আমদানি-রফতানি, গুদাম ও হিমাগার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার দায়ে এক বছরের কারদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রেখে কৃষি বিপণন বিল পাস করেছে সংসদ। এছাড়া কৃষিপণ্যে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন রাসায়নিক ব্যবহার করলে, ওজনে কম দিলে, কৃষিপণ্যে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে, অধিক মুনাফা করলে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গুদাম বা হিমাগারে মজুতকৃত কৃষিপণ্য সরবরাহ না করলেও একই দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।  

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের মঙ্গলবারের বৈঠকে বিলটি পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলে কৃষিপণ্যের ক্রয়-বিক্রয়ে মধ্যস্থাকারী, পাইকারী বিক্রেতা, আরতদার, মজুতদার, কমিশন এজেন্ট, বা ব্রোকার, ওজনদার, নমুনা সংগ্রহকারী, ফরিয়া বা বেপারীকে ব্যবসা পরিচালনাকরার জন্য বাজারকারবারী হিসেবে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিলে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা স্থাপিত কৃষি বাজারের জন্য মার্কেট চার্জ নির্ধারণ, গুদাম ও হিমাগারে কৃষিপণ্যের মজুতের ভাড়ার হার নির্ধারণ করে দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া সরকার কর্তৃক কৃষিপণ্যের এলাকাভিত্তিক মূল্য ও লাভের হার নির্ধারণ করে দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আইনের বিধান লংঘন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য ও ফৌজদারী কায়বিধি অনুযায়ী অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হবে। প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হবে। আইনের উদ্দেশ্যপূরণ কল্পে সরকারের একটি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থাকবে। এই অধিদপ্তর কৃষিপণ্যে মূল্যনীতি প্রণয়ন, কৃষিপণ্যের সর্বনিম্ম মূল্য নির্ধারণ, কৃষিপণ্যের মান নির্ধারন, বাজারকারবারি, কৃষি ব্যবসায়ীদের সংগঠন-সমিতিকে তালিকাভক্তিকরণ ও কৃষিপণ্যে মূল্য সহায়তা প্রদান করবে। 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতকরার পাশাপাশি কৃষি বাজার ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ, কৃষি ব্যবসার উন্নয়ন, কৃষি বিপণন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে বিলটি প্রণীত হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষিজ অর্থনীতি শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে দি ওয়্যার হাউজ অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯ এবং দি এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেট রেগুলেশন এ্যাক্ট ১৯৬৪ আইন দুটি রহিত করে বাংলা ভাষায় কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে বিলে দি এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেট রেগুলেশন (এমেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট ১৯৮৫-এর উল্লেখ থাকলেও আইনে বিলটি বাতিল বা নতুন আইনের সাথে একীভূত হওয়ার বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

সরকারী কর্মচারীদের সুবিধা বাড়ানোর বিল পাস
এছাড়া গতকাল সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা বাড়াতে ‘বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০১৮’ পাস করেছে জাতীয় সংসদ। জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। 

একইসঙ্গে জাতীয় সংসদে কর্মক্ষম জনগণের দক্ষতা উন্নয়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন, সংস্কার, সক্ষতা বৃদ্ধি ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৮’ পাস হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হয়। 

বিডি-প্রতিদিন/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর