১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০৯:৪৮
নিরাপত্তা পরিষদে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

'ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ কেবল দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না'

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

'ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ কেবল দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না'

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নসহ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি’ বিষয়ে বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, “ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ কেবল দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না। ওআইসি সতর্ক করে দিতে চায়, এক্ষেত্রে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়”। 

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নসহ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি’ বিষয়ক এক মুক্ত আলোচনায় ওআইসির সভাপতি হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সম্মিলিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে এই ফিলিস্তিন প্রশ্ন হতে পারে একটি লিটমাস পরীক্ষা’-এ অভিমত পোষণ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “এর সমাধান আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা এবং শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। জাতিসংঘের রেজুলেশনসমূহ, মাদ্রিদ নীতি এবং আরব শান্তি প্রক্রিয়াসহ আন্তর্জাতিকভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো বিচার্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করতে হবে”।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের ঔপনিবেশিক নীতির বিষয়ে ওআইসি বার বার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছে। ইসরাইলের এই ঔপনিবেশিক আগ্রাসন পূর্ব জেরুজালেমের জনতাত্ত্বিক গঠন, অবস্থান ও চেহারা এমনভাবে পাল্টে দিয়েছে, যার ফলে এই ভূখণ্ড সাবলীল ফিলিস্তিনি পরিবেশ থেকে একেবারেই আলাদা হয়ে গেছে। ঠিক এমনিভাবেই অনবরত ইসরায়েলি পুলিশ দ্বারা অপমানিত করা হচ্ছে পবিত্র আল আকসা মসজিদ, যা সৃষ্টি করছে ভয়ঙ্কর উত্তেজনা”। 

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “সহিংসতা ও বেসামরিক নাগরিগদের হতাহতের ঘটনা বেদনাদায়কভাবে বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনেই হত্যা করা হচ্ছে শিশু ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদেরকে”। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা পরিষদের কাছে ইসরায়েলি অবরোধ সরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দায়িত্বশীলতার সাথে সঙ্কটের সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার সভাপতি রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

তিনি আরও বলেন, “যুগের পর যুগ কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনি শরণার্থী গৃহছাড়া; ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত। আর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের রিলিফ এজেন্সী আনরওয়া’র (The United Nations Relief and Works Agency for Palestine Refugees in the Near East - UNRWA) তহবিল সঙ্কটের ফলে এই মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাস্তুচ্যুত এ সকল ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিজভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকারসহ তাদের মানবাধিকার সংরক্ষণে আনরওয়া’র তহবিল বৃদ্ধি করা প্রয়োজন”। এক্ষেত্রে সকল আন্তর্জাতিক পক্ষকে এগিয়ে আসার জোর দাবি জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্ত বণ্টন অনুযায়ী স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকল্পে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফলপ্রসূ সহযোগিতার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চলতি মেয়াদে ওআইসির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।


বিডি-প্রতিদিন/১৯ অক্টোবর, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর