৫ নভেম্বর, ২০১৮ ১০:৪৮
তফসিল ৮ নভেম্বর

নির্বাচন হতে পারে ২০-২৩ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন হতে পারে ২০-২৩ ডিসেম্বর

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ৮ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল ইসির ৩৯তম কমিশন সভা শেষে সন্ধ্যা ৭টায় কমিশনের এ সিদ্ধান্ত জানান নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। সূত্র জানিয়েছে, এবারে বিজয় দিবসের পরে ভোট হতে পারে। এক্ষেত্রে ২০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বা ২৩ ডিসেম্বর রবিবার ভোটের তারিখ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও ইসি কর্মকর্তাদের চিন্তায় রয়েছে। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ১৮, ১৯, ২০ ও ২২, ২৩ এবং ২৭ ডিসেম্বর ভোটের চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ৮ নভেম্বর সকালে আবার কমিশন সভা হবে, সভায় ভোটের তারিখ চূড়ান্ত হবে।

এ ছাড়া সংবাদ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওইদিন বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনের বিস্তারিত তফসিল ঘোষণা করবেন।’ সাধারণত সন্ধ্যা ৭টার পরে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে এ তফসিল ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে। চলমান রাজনৈতিক সংলাপের মধ্যে তফসিল দিতে ‘অপেক্ষা’ করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অনুরোধের মধ্যে এ তথ্য জানায় ইসি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দলগুলোর সংলাপ শেষ হচ্ছে ৭ নভেম্বর।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘৪ নভেম্বর আমাদের তফসিল দেওয়ার কথা ছিল। এখন সব কিছু বিবেচনা করে ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হবে।’ ৩ ও ৪ নভেম্বরের কমিশন সভায় প্রয়োজনীয় বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে তা জারি করা হবে। ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার জানান, স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এখনো কত সংখ্যক আসনে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালনের কথা জানান তিনি। তবে কদিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হবে নিশ্চিত জানাননি এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে নিষ্পত্তি করব কিনা সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যেহেতু আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালনের বিষয় রয়েছে; বাধ্যবাধকতা রয়েছে; খুব শিগগির তা আমরা করব।’

খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া ভোট করতে পারবেন কিনা সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান এ নির্বাচন কমিশনার। সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কমিশনের ৩৮তম বৈঠক চলে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বসে ৩৯তম কমিশন সভা। এ সভায় তফসিল কবে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

এ কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

৪৫ দিন সময় রেখে তফসিল : সাধারণ তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে। সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে ৪২ দিন সময় রেখে ভোটের তফসিল হয়েছিল। একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিলে ৪৫ দিন সময়কে ‘স্ট্যান্ডার্ড’ মেনে ভোটের সময়সূচি ঘোষণা করা হচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। তবে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহার ও ভোটের তারিখ ৮ নভেম্বরই তফসিলের সময় চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা জানেন, একটা স্ট্যান্ডার্ড সময় লাগে। তা ৪৫ দিনের কাছাকাছি।’ সেক্ষেত্রে ১৯ (বুধবার)-২০ (বৃহস্পতিবার) ডিসেম্বরের কাছাকাছি ভোটের ইঙ্গিত দেন এ নির্বাচন কমিশনার।

কখন ভোট : ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হলে ৪০ দিনের সময় শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর থেকে। ১৬ ডিসেম্বরের পরে ১৭-২০ (সোমবার-বৃহস্পতিবার) ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে ৪০-৪৩ দিন। ২১ ও ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার ও শনিবার রয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৪৬ দিন হবে। ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন রয়েছে। সেক্ষেত্রে রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার ২৩, ২৪, ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর রয়েছে। ৪৯ দিন সময় দিতে হবে ২৭ ডিসেম্বরে ভোটের জন্য। ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার ও শনিবার বাদে ভোটের তারিখ ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বরে গেলে ৫০-৫১ দিন সময় দিতে হবে কমিশনকে। ইতিমধ্যে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই এখনো ভোট নিতে প্রস্তুতি রয়েছে ইসির।

বিডি-প্রতিদিন/০৫ নভেম্বর, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর