৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৪:৪৬

'পাকিস্তানি দূতাবাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র'

নিজস্ব প্রতিবেদক

'পাকিস্তানি দূতাবাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র'

লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বাংলাদেশে বিজয়ের মাসে পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গোপন বৈঠক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ-বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। আজ দুপুরে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। 

তিনি বলেন, একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটি রাষ্টের কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে দূতাবাসের সঙ্গে যাতায়াত থাকতে পারে। তবে বিজয়ের এই মাসে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক জনমনে প্রশ্নের সঞ্চার করে। একদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সঙ্গে গোপন বৈঠক, অন্যদিকে পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক ষড়যন্ত্রের আভাস। দুই বৈঠক একই সূত্রে গাঁথা। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি, এই সাক্ষাতে আসন্ন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতিকে বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, গতকাল ও আজকে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সারাদেশে তাদের নেতাকর্মীরা যে সন্ত্রাস ও অগ্নিকান্ড চালাচ্ছে। বিএনপির গুলশান ও পল্টন কার্যালয়ে ভাঙচুর করছেন। এই হামলা আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশকেই শুধু বিঘ্নিত করে না, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সুষ্ঠু ধারাকেও ব্যাহত করে। 
  
তিনি বলেন, আদর্শ বিবর্জিত একটি দলের প্রধান যখন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয় এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্ণধার দুর্নীতির দায়ে যখন বিদেশে অবস্থান করে, তখন বিএনপি নেতাকর্মীদের এধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের আস্ফালন শুধু রাজনৈতিক পরিবেশকে নয় সামাজিক পরিবেশকেও বিনষ্ট করে। ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, বিএনপি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে কি ধরনের বাণিজ্য করেছে। একটি রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে এধরনের বাণিজ্য হতে পারে না। যে থেকে বুঝা যায়, বিএনপি কোনও রাজনৈতিক দল না বরং একটি কর্পোরেট সংস্থা। 

আবদুর রহমান বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রেক্ষিতেই বিএনপি তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ এবং এর মাধ্যমে দলের নেতৃত্বএর ওপর আস্থাহীনতার প্রকাশ পায়। এমন মনোনয়ন বাণিজ্যের নেতৃত্বে আছেন মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভী। যার নেপথ্যের নায়ক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান। 

আওয়ামী লীগের এ নেতা অভিযোগ করেন, আমরা বারবার বলে এসেছি, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট কোনও রাজনৈতিক জোট নয়, বরং এটা আদর্শিক। বিএনপির প্রধান শরিক ঐক্যফ্রন্ট নয়, জামায়াত। তাদের মনোনয়ন ভাগাভাগির মধ্য দিয়েই আবারও সেটা প্রমাণিত। আপানার ইতোমধ্যে জানতে পেয়েছেন শরিক হিসেবে জামায়াত আসন পেয়েছে ২৩টি এবং ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ১৭টি। যার মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয় জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি গাঁটছড়া  সম্পর্ক যা অবিচ্ছেদ্য।

দলের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ২৪ জন বিদ্রোহীকে সনাক্ত করেছিলাম। অনেকের সাথে কথা বলেছি। তাদের কেউ কেউ তুলে নিয়েছেন। আমাদের দলের প্রধান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিদ্রোহীদের সরে দাঁড়াতে চিঠি দিয়েছেন। এখন যে কয়েকজন বিদ্রোহী আছেন, আশা করছি বিকালের মধ্যেই তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে মহাজোট মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন। এবার কোন প্রার্থী থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন এই নেতা।

জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমাঝোতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে ছাড় দিয়েছি। এখনো আলোচনা শেষ হয়নি। তবে সন্তোষজনক সমাধানের পৌঁছাতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, সাবেক ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু প্রমুখ। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর