১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ২১:৩২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সংরক্ষণের জোরালো দাবি সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সংরক্ষণের জোরালো দাবি সংসদে

বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনসহ বহু আন্দোলন-সংগ্রামের সাক্ষী আর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওায়ার্দী উদ্যানের পুরোটাকেই সংরক্ষণের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রবিবার সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও সাবেক গৃহায়ণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। 

তোফায়েল আহমেদ বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান একটা ঐতিহাসিক জায়গা। অনেক স্মৃতিবিজড়িত এই উদ্যান। এটাকে সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। স্বৈরশাসক জিয়া এই ঐতিহাসিক উদ্যানকে নষ্ট করতেই শিশুপার্ক নির্মাণ করেন। এমনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই বটতলা থেকে আমরা বহু আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, সেই বটগাছটি পর্যন্ত নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেওয়ার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করে ফেলেছিল আইয়ুব খানরা। ১৯৬৮ সালের ২৯ জুন যখন ক্যান্টনমেন্টে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়, এর বিরুদ্ধে তখন ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলি। তীব্র আন্দোলনের মুখে পাক হানাদাররা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ১০ লক্ষাধিক লোকের উপস্থিতিতে কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে সমাবেশ থেকে জাতির পিতাকে আমরা বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করি। 

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। শুধু ৭ মার্চের ভাষণ এবং পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণই নয়, এই উদ্যানে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পুরো উদ্যানটিকেই সংরক্ষণ করতে হবে। এই উদ্যান থেকেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। ’৬৯ এর ২৩ ফেব্রুয়ারি এই উদ্যানে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়। এই স্থানটিকেও সংরক্ষণ করতে হবে। ’৭০ এর নির্বাচনের পর ১০ জানুয়ারি এই উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৬ দফার দাড়িকমাও বাদ দিলে বাংলার মানুষের মুক্তি আসবে না। এই উদ্যানেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এই উদ্যানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ভারতীয় বাহিনীকে ফেরত যেতে হবে। পরে সাড়ে ১৮ হাজার ভারতীয় সদস্য দেশে ফিরে যান। 

সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে আমরা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এখানে অনেক ইতিহাস। এসব ইতিহাস মুছে ফেলতে জিয়া চেষ্টা করেছিলেন, সেজন্য তিনি শিশুপার্ক বানান। বঙ্গবন্ধু যে স্থানটিতে দাঁড়িয়ে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেই স্থানটিকেও নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই এসব ঐতিহাসিক স্থানও থাকবে, শিশুপার্কও থাকবে। এখানে শিশুরা আসবে, তারা দেশের ইহিতাস জানবে। এখানে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প। ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে এই উদ্যানকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

বিডি-প্রতিদিন/১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর