২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৫:১১

স্মৃতির ক্যাম্পাসে একুশে পদকে ভূষিত ভাষা সৈনিক টিপু

অনলাইন ডেস্ক

স্মৃতির ক্যাম্পাসে একুশে পদকে ভূষিত ভাষা সৈনিক টিপু

গোলাম আরিফ টিপু ৮৫ বছর বয়সেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করছেন। এর চেয়ে তার বড় পরিচয়-তিনি ভাষা সৈনিক। 

গোলাম আরিফ টিপু একাধারে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, উত্তরবঙ্গের প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কারিগর ও রূপকার। ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে এবার একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন প্রবীণ এই আইনজ্ঞ।

দেশের প্রথম শহীদ মিনার রাজশাহীতে হয়েছিলো বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমকে জানান ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু। তিনি বলেন, জানতে পারলাম, ঢাকার রাস্তায় গোলাগুলি হয়েছে। সেখানে বেশ কিছু ছাত্র মারা গেছেন। এই খবর পাওয়ার পর আমরা রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের ডি ব্লকে যাই। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হল, নিহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ করতে হবে।

তখন শহীদ মিনারের চিন্তা কারও মনে আসেনি। সে সময় কলেজের ভেতর ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। সেখানে বেশ কিছু ইট পড়েছিল। রাতেই ওই ইট ও কাদা দিয়ে এফ ব্লকের সামনে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়, যা ছিল দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ। তিনি বলেন, রাতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে সবাই চলে যাই। কিন্তু সকালে পুলিশ সেটি গুঁড়িয়ে দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে গেল।

গোলাম আরিফ টিপু ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের কমলাকান্তপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় বোন তিন ভাইয়ের মধ্যে টিপু দ্বিতীয়। রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এবং কারাভোগ করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই রাজশাহী হয়ে ওঠে তার রাজনীতির তীর্থস্থান। মস্কোপন্থী ন্যাপ রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় থেকে নব্বইয়োত্তর সময়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেন।

তবে, গণমানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছাড়েননি কখনো। স্থানীয় ও জাতীয় সব ইস্যুতে তিনিই সর্বজনশ্রদ্ধেয় হিসেবে সামনের কাতারে থেকেছেন। জীবনে বহুবার নানা প্রলোভন উপেক্ষা করেছেন। নিরহংকার, নির্লোভ, সৎ, সাদামাটা জীবনের অধিকারী গোলাম আরিফ টিপু আদর্শচ্যুত হননি। এখনো তারুণ্যের উদ্যম নিয়ে রাত জেগে বই পড়েন। মামলার নথি ঘাঁটেন। ক্লান্তি তাকে স্পর্শ করে না।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর