ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করেছে বিজিবি। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) রাত ১১টা ২০ মিনিটের সময় কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে ভারতে যাওয়ার প্রাক্কালে সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক হন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মানিক।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনরে পর আত্মগোপনে চলে যান শামসুদ্দিন মানিক। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয় গত বৃহস্পতিবার।
মো. জিয়াউল হক নামে এক আইনজীবী ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলামের আদালতে ওই মামলা দায়ের করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকেও সেখানে আসামি করা হয়। মানহানির অভিযোগে বিবাদীদের কাছে ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন বাদী। বিচারক তার আর্জি শুনে অভিযোগ তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর চ্যানেল আইয়ের একে আলোচনা অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানকে ‘রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে’ আখ্যায়িত করেন। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি সেমিনারে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ‘মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না’। তিনি ছিলের মুক্তিযুদ্ধে ‘অনুপ্রবেশকারী’।
এছাড়া জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ গত ১৯ আগস্ট নোয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আরেকটি মামলা করেছেন। সেখানেও জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করার অভিযোগ আনা হয় সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে।
এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশন টক শোতে কথা বলতেন তিনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আলোচনার এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালকের উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার সঞ্চালকের উপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন।
এখানেই শেষ নয়, অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে সঞ্চালককে প্রকাশ্যে অযোগ্য ভাষায় গালি দেন বিচারপতি মানিক। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন এ বিষয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ