আনসারের পর রাজধানীতে এবার সড়ক অবরোধ করেছেন প্যাডেল রিকশাচালকরা। তারা ব্যাটারিচালিত রিকশাকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা নিষিদ্ধসহ ৭ দফা দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। এতে শাহবাগ মোড়কে ঘিরে থাকা প্রতিটি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্যাডেল রিকশাচালকরা শাহবাগে এসে অবস্থান নেন। অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন রিকশা মালিক ঐক্যজোট।
ঐক্যজোটের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে রিকশা মালিকানা নতুন লাইসেন্স প্রদান ও পুরাতন লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে; সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও বৈধ লাইসেন্সধারী রিকশা পেশাজীবীদের স্বার্থে ঢাকা উত্তর/দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে চালক লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। অসুস্থ চালকদের ফ্রি ফ্রাইডে মেডিকেল চিকিৎসা প্রদান করতে হবে; ঢাকা উত্তর/দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিকশা পেশাজীবীদের ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
এছাড়া এককালে রিকশা বাঙালি মুলুকের প্রাচীন বাহন হিসেবে (নৌকা, পালকি, ঘোড়াগাড়ি) এর মতো রিকশাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ন্যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও জাতীয় জাদুঘরে স্থান দিতে হবে; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব বীর নিহত হয়েছেন ও যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন- তাদেরকে বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজদের অর্থ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে, সংগৃহীত অর্থ দিয়ে পরিবারকে পূনর্বাসন ও আহতদের সু-চিকিৎসা প্রদান করতে হবে এবং বিগত সরকারের সময়কালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সরকার দলীয় চাঁদাবাজরা আধিপত্য বিস্তার করে রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকায় অন্যায় ও বেআইনিভাবে বিশেষ পোশাকে রিকশা পরিচালনা করে আসছিল, সেসকল রিকশাগুলোকে বন্ধ করে, পায়ে চালিত বৈধ রিকশাকে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।
একজন আন্দোলনকারী রিকশাচালক গণমাধ্যমের কাছে বলেন, “আমরা প্রতিদিন ২০০ টাকার বেশি আয় করতে পারি না। রিকশার ভাড়া পরিশোধ করার পরে এবং কিছু চাল কেনার পরে, আমাদের পরিবারের জন্য খাবার কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকা আমাদের কাছে থাকে না।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ মে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের পর পুলিশ ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করা শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯ মে শত শত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক এই আটকের প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১০ মোড়ে অবরোধ করেন। মিরপুরের কালশী মোড়ে বাস ভাঙচুর ও পুলিশ বক্সে আগুন দেন তারা।
পরদিন ২০ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দেন।
এর আগে রবিবার চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেন কয়েক হাজার আনসার সদস্য। পরে রাতে সচিবালয় অবরুদ্ধে করেও বিক্ষোভ করেন তারা। এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় সচিবালয় ছেড়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্যরা।
বিডি প্রতিদিন/একেএ