চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করা আনসার সদস্যরা গতকাল রবিবার রাতে ছাত্রদের পাশাপাশি সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহলের ওপরও হামলা করে। আনসাররা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, লাঠি দিয়ে আঘাত করায় ছয়জন সেনাসদস্য আহত হন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আনসার সদস্য কর্তৃক সচিবালয় এলাকায় সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ সোমবার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘গতকাল রবিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েনরত সেনা সদস্যরা বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং সচিবালয়ের সকল গেটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।’
‘এদিন (গতকাল) বিভিন্ন সময়ে আনুমানিক ১০ হাজার আনসার সদস্য একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাতজন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিম্মি করে রাখেন। উত্তেজিত আনসার সদস্যদের শান্ত করার জন্য বিকালে মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি সচিবালয়ে আগমন করেন এবং আনসার সদস্যদের সকল দাবি মেনে নেন। এরপরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ত্যাগ না করে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের ৩ নম্বর গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় উত্তেজিত আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদের উপর অতর্কিত হামলা করেন এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহলের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠি দ্বারা আঘাত করেন। এসময় ছয়জন সেনাসদস্য আহত হন এবং এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।’
‘এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মোতায়েনরত সেনাসদস্যরা বারংবার ধৈর্য সহকারে আনসার সদস্যদের সাথে এনগেজমেন্ট করা সত্ত্বেও উত্তেজিত আনসাররা নিবৃত্ত না হলে আকাশের দিকে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাত উপদেষ্টা, ডিজি আনসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের সকল কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় এলাকা নিরাপদে ত্যাগ করেন। মোতায়নরত সেনাসদস্যরা সচিবালয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং পরবর্তীতে জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় প্রাথর্নাকারী কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যকে নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ