নারীর ওপর ভাষিক আক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণের সময় হয়রানির অভিযোগে ঢাকার শাহবাগ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশরাফুল সিকদারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক মিনহাজুল ইসলাম আইনজীবীর মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠান। ভুক্তভোগীর পক্ষে নোটিশ দেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সবুজ।
গত ১৫ মার্চে এই পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক এ হয়রানির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাড়ে পাঁচমাস পর লিগ্যাল নোটিশ প্রদানের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, যখন এ ঘটনাটি আমাদের সাথে ঘটানো হয়েছিল তখন স্বৈরাচারি সরকার ক্ষমতায় ছিল। যেহেতু পুলিশ তখন তাদের সেবাদাস প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল, তাই তখন এ বিষয়ে আমরা নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনো পদক্ষেপ নেইনি। এখন যেহেতু কথা বাক-স্বাধীনতা ও আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ ফিরে এসেছে, তাই এখন এ পদক্ষেপ নিয়েছি।
নোটিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ মার্চ, বিকাল ৫টার দিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নারীর ওপর ভাষিক আক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছিল। তাদের লিফলেট বিতরণের উদ্দেশ্য ছিল সমাজে একে অন্যের ওপর ক্ষিপ্ত হলে কেউ যেন কারো মাকে নিয়ে অশ্লিল গালি না দেয়। এ কর্মসূচি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু করে লিফলেট বিতরণ করতে করতে পল্টন মোড়ের দিকে অগ্রসর হন শিক্ষার্থীরা। এসময় মেট্রোরেলের সচিবালয় স্টেশনের নিচে আসলে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল সিকদার তাদের গতিরোধ করে এবং সরকারবিরোধী লিফলেট মনে করে শিক্ষার্থীদের মোবাইল চেক করতে থাকে। এছাড়াও তখন হাদিসের বাণী সম্বলিত লিফলেট মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে এই পুলিশ কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করেন ও গ্রেফতার করতে উদ্যত হন। পরে ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তার অনুরোধে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেন এসআই আশরাফুল সিকদার।
এ ঘটনায় বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সংরক্ষিত বাক-স্বাধীনতার অধিকার খর্ব হয় বলে আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে এ নোটিশের জবাব না দেয়া হলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলা হয় নোটিশে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সবুজ বলেন, ঘটনার দিন শাহবাগ থানার এসআই আশরাফুল সিকদার যে কাজটি করেছেন, সেটি বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। তিনি শিক্ষার্থীদের গলাটিপে বাক-স্বাধীনতার অধিকার হরণ করেছেন। আমরা তাকে ক্ষমা চেয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছি। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবো।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত