সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
মঙ্গলবার ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানান। বিবৃতিতে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৭ সালে ১/১১ এর জরুরি সরকারের সময় কাল্পনিক অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। যা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। কারণ তথাকথিত জরুরি সরকার ছিল বর্তমান আওয়ামী সরকারেরই আন্দোলনের ফসল। একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মামলাগুলো করা হয়।
তারা আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র-জনতা ১৭ বছর গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই সংগ্রামে বিরামহীন নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা রাজনৈতিক এবং তার বিরুদ্ধে বিগত সরকারের শাসনামলে পলাতক শেখ হাসিনার নির্দেশে কয়েকটি মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু অতিসম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এসব রাজনৈতিক মামলার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এটা খুবই দুঃখজনক।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, এক-এগারোর সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। মূলত বিএনপি তথা জিয়া পরিবারকে দমনের লক্ষ্যেই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলাটি করেছিল। ২০০৭ সালের জরুরি সরকারের আমলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও কয়েকটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় (হাসিনা) আসার পরই সেই মামলাগুলো উধাও হয়ে যায়। সে সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে হওয়া সকল মামলা যদি উঠে যেতে পারে, তাহলে তারেক রহমান, বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেওয়া মিথ্যা মামলাগুলো কেনো উঠছে না? আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অপমানিত করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় গোটা জাতি সংক্ষুব্ধ হয়েছে। তাহলে আমাদের ওপরে এতো অত্যাচার-নির্যাতন-মিথ্যা মামলা কেনো অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনায় আসছে না কেনো? আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) মিথ্যা মামলার ব্যাপারে যদি আমরা সমব্যথিত হতে পারি, সোচ্চার হতে পারি। তাহলে আপনারা দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে আমাদের মামলাগুলো আগের মতোই আছে, আমাদের আগের মতোই আদালতে যেতে হচ্ছে।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দানকারী তরুণ প্রজন্মের মুক্তির কান্ডারি তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। এরপর তার বিরুদ্ধে আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। মূল লক্ষ্য হচ্ছে- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমানসহ সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে পুনরায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশালে ফিরিয়ে নেওয়া। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার ওই দুঃস্বপ্ন দেশের ছাত্রজনতা গত ৫ আগস্ট নিজেদের জীবন ও রক্ত দিয়ে প্রতিহত করেছে। ফলে গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন খুনি হাসিনা। অবিলম্বে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান ইউট্যাব।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত