শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

এসেনসিয়াল ড্রাগসে অনিয়ম

তদন্ত করতে বলল সংসদীয় কমিটি

এসেনসিয়াল ড্রাগসে অনিয়ম

সরকারি অনুমোদন ছাড়া কীভাবে নিজস্ব বেতন কাঠামো চালু করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়েই সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কীভাবে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানির বরাতে নির্ধারিত বেতন স্কেলের অতিরিক্ত কোটি টাকা ব্যয় করছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে সরকারের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। তারা বলেছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া নিজস্ব বেতন স্কেলের নামে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নামে, বিনা টেন্ডারে কেনার নামে, নীতিমালা বহির্ভূতভাবে রিপিট অর্ডারের মাধ্যমে বৈদেশিক মালামাল কেনার মাধ্যমে, কোম্পানির লভ্যাংশ সরকারের অনুমোদন ছাড়া শ্রমিকদের বিলি করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগ ও এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করেছে।
এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে ক্ষুব্ধ কমিটি অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো, আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটিকে তা অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছে।
সংসদ ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত অডিট আপত্তি পর্যালোচনা করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, পঞ্চানন বিশ্বাস, মো. আফসারুল আমীন, মঈনউদ্দীন খান বাদল ও রুস্তম আলী ফরাজী অংশ নেন। সিঅ্যান্ডএজি মাসুদ আহমেদসহ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ২০০৮-২০০৯ ও ২০০৯-১০ অর্থবছরের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট, ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রদত্ত অডিট আপত্তিগুলো আলোচনা হয়। কমিটির কাছে অডিট প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিঅ্যান্ডএজি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানিতে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদান করায় সরকারের ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি ও অনিয়ম হয়েছে। এ ছাড়া ওষুধ উৎপাদনের জন্য চাহিদার অতিরিক্ত কাঁচামাল কিনে অপচয় করার মাধ্যমে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। রিপোর্টে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে কোম্পানির প্লান্ট ম্যানেজারের নিয়মিত চাকরির অবসান ঘটিয়ে তাকে চুক্তিভিত্তিক পরিচালক (উৎপাদন) পদে নিয়োগ দেওয়ার উল্লেখ করা হয়েরছ। এর মাধ্যমে সরকারের ৩৮ লাখ ৭২ হাজার টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। রিপোর্টে বিনা টেন্ডারে ওষুধের কাঁচামাল কেনার মাধ্যমে সরকারের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির বার্ষিক মুনাফার ২৭ লক্ষাধিক টাকা বিধিবহির্ভূতভাবে ওয়ার্কার্স পার্টিসিপেশন ফান্ডে স্থানান্তর করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করে আর্থিক অনিয়ম করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর