সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

জেএমবির নারী শাখার প্রধান গ্রেফতার

পাকিস্তানিসহ আটক আরও আট

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নারী শাখার প্রধানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই নারী শাখার প্রধান হলেন ফাতেমা আক্তার। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনার মূল সন্দেহভাজন জেএমবি কমান্ডার শেখ রহমাতুল্লাহ ওরফে সাজিদের স্ত্রী। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- আবদুল্লাহ কাজী, ইশরাত আলী শেখ ও শওকত সরদার।

গত শনিবার রাতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে জিহাদি বই, বিস্ফোরক এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের গতকাল আদালতে হাজির করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন। তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে করা বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দুই মামলায় প্রত্যেকের ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন দুই মামলায় ফাতেমাকে তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ড দেন। এ ছাড়া আবদুল্লাহ কাজী, ইশরাত আলী শেখ ও শওকত সরদারকে দুই মামলায় পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ফাতেমা জেএমবির মহিলা শাখার প্রধান। ফাতেমা পশ্চিমবঙ্গে শিমুলিয়া মাদ্রাসায় নারীদের প্রশিক্ষণ দিতেন। সেখানে তারা (জেএমবি) একটি জঙ্গি নেটওয়ার্কও গড়ে তোলেন। এ নেটওয়ার্কের রাজনৈতিক উইংয়ের প্রধান ছিলেন সাজিদ। ফাতেমা ছাড়া আবদুল্লাহ কাজী, ইশরাত আলী শেখ ও শওকত সরদার সবাই সাজিদের সহযোগী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে তিনি দাবি করেন। মনিরুল ইসলাম জানান, ফাতেমা সাজিদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করেছিল। সেখানে ফাতেমা একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে নারীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করত। সে ২০-২৫ জন নারীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়। সাজিদ গ্রেফতার হওয়ার পরই ফাতেমা গ্রেফতার এড়াতে বাংলাদেশে চলে আসে।

জঙ্গি সন্দেহে পাকিস্তানি নাগরিকসহ পাঁচজন আটক : নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম জানান, নগরীর অভিজাত জিইসি মোড় এলাকায় হোটেল লর্ডস ইন থেকে গোয়েন্দা পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে এক পাকিস্তানি নাগরিকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগর গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আটক করে। আটক এ পাঁচজন হলেন পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম (৪৫), মোহাম্মদ আমিন (৫০), আবদুল মজিদ (৩০), ছালামত উল্লাহ (৪৫) ও শফিউল্লাহ (৪০)। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কুসুম দেওয়ান জানান, আটক এ পাঁচজন শনিবার হোটেল লর্ডস ইনে ওঠেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। তাদের চট্টগ্রামে আসার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মোহাম্মদ আলমের কাছে পাকিস্তানের পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তিনি নিজেকে গ্লোবাল রোহিঙ্গা সেন্টারের (জিআরসি) পরিচালক পরিচয় দিয়েছেন। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় নেদারল্যান্ডসে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আবদুল মজিদ সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায়। তার কাছে থাকা বাংলাদেশি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। আটক পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কুসুম দেওয়ানকে প্রধান করে আট সদস্যবিশিষ্ট যৌথ সেল গঠন করা হয়েছে। সেলের অন্য সদস্যরা হলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. হাছান চৌধুরী ও সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম, কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ, সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ কুমার দাশ, সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম এবং নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজ আহমেদ।

সর্বশেষ খবর