সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক

সার্কের পরিধি বাড়ানোর সুপারিশ

সার্কের পরিধি বাড়ানোর সুপারিশ

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগী সংস্থা সার্কে নতুন করে পর্যবেক্ষক ও সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে সহযোগী সদস্য করার সুপারিশ এসেছে সদস্য আট দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে। গতকাল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে আগের পর্যবেক্ষক নিয়োগ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ সুপারিশ আগামীকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। পরে ঘোষণা আসতে পারে শীর্ষ সম্মেলন থেকে। বার্তা সংস্থার তথ্যানুসারে, কাঠমান্ডুর হোটেল সলটিতে গতকাল সকালে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী সার্ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ৪১তম বৈঠক। সার্কভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্র সচিবদের এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। বৈঠকের শুরুতেই স্ট্যান্ডিং কমিটির বিদায়ী চেয়ারম্যান মালদ্বীপের আলী নাসির মোহাম্মদ নেপালের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব শংকর দাস বৈরাগীর কাছে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। আগের দিন সার্ক প্রোগ্রামিং কমিটির আলোচনা, সার্কের বার্ষিক প্রতিবেদন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতিবেদন, সার্ক উন্নয়ন তহবিল নিয়ে আলোচনা হয় এ বৈঠকে। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পরিবহন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জৈব-প্রযুক্তি, সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা, সন্ত্রাস দমন ইত্যাদি ক্ষেত্রে করণীয় নিয়ে দুই দিনের এ বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে। চেয়ারম্যান শংকর দাস বৈরাগী তার বক্তৃতায় বলেন, সার্ক নানা বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়নের গতি খুবই শ্লথ। সার্ককে এগিয়ে নিতে এবং এর লক্ষ্য পূরণে এসব সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে এক বছরের জন্য নতুন পর্যবেক্ষক অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে তুরস্ক সার্কের পর্যবেক্ষক হওয়ার আবেদন করলেও সে বিষয়ে আজও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুপারিশ এসেছে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথমদিনের বৈঠকে। আগ্রহী দেশগুলোকে পর্যবেক্ষক থেকে পর্যায়ক্রমে সংলাপের অংশীদার এবং সহযোগী সদস্য করার সুপারিশও করা হয়েছে।

নতুন করে সার্ক পর্যবেক্ষক অন্তুর্ভুক্ত করার আগে তাদের অংশগ্রহণমূলক একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়েছে। এবারের সম্মেলনেই এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে। এ ছাড়া স্ট্যান্ডিং কমিটির এ সভায় গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে নয়টি পর্যবেক্ষক দেশের সঙ্গে সার্কের সম্পর্ক এবং ভূমিকা। কারণ সার্কের পর্যবেক্ষক যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার, মরিশাস, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এতদিন শুধু অধিবেশনের শুরু এবং শেষদিনে অংশগ্রহণ ছাড়া আর কোনো ভূমিকা রাখেনি বা রাখতে পারেনি। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে সার্কে পর্যবেক্ষক এবং দাতাদের অংশগ্রহণবিষয়ক নীতিমালা তৈরির সুপারিশ উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষকরা সার্ক সদস্যদেশগুলোতে সাতটি ক্ষেত্রে অবদান রাখার সুযোগ পাবে। এর আওতায় তারা কমপক্ষে তিনটি দেশে কৃষি, কানেকটিভিটি, জ্বালানি, যোগাযোগ, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা করতে পারবে। সার্কের প্রতি পর্যবেক্ষকদের অঙ্গীকার দৃঢ় এবং কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে এ সিদ্ধান্ত। এসব ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পর্যবেক্ষকদের প্রথমে সার্ক সচিবালয়ে আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সদস্যদেশের অনুমতি সাপেক্ষে সার্ক সচিবালয় পর্যবেক্ষকদের আগ্রহী প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ দেবে।

 

 

সর্বশেষ খবর